নিউইয়র্ক নগরের প্রতিটি স্কুলে শিক্ষক ও কর্মীদের করোনার টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। তবে ইউনাইটেড ফেডারেশন অব টিচার্সের (ইউএফটি) প্রেসিডেন্ট মাইকেল মালগ্রো বলেছেন, শিক্ষকদের শারীরিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে টিকাদানে ছাড় দিতে হবে। পাশাপাশি শ্রেণি কক্ষের বাইরে তাঁদের কর্মরত রাখতে হবে। এ নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর নগর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
মালগ্রো বলেন, ‘শিক্ষকেরা ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিনকে সমর্থন করেছে। তবে আমাদের চিকিৎসা শর্ত বা টিকা গ্রহণ থেকে কোনো কোনো ব্যক্তি বিশেষকে বাইরে রাখার ভিন্ন কারণও রয়েছে।’
মাইকেল মালগ্রোর দাবির পর সিটি বিষয়টিকে প্রাথমিকভাবে সমর্থন করেছে। তবে বলা হয়েছে, টিকা ছাড়া কর্মীদের মজুরি তালিকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে এবং তাঁদের চিকিৎসা বা অন্যান্য শর্তাবলির জন্য শ্রেণি কক্ষের বাইরে কাজ করতে দেওয়া হবে।
টিকা নিতে অস্বীকারকারী শিক্ষকদের জন্য বর্ধিত ছুটি এবং ‘লিভ অব অ্যাবসেন্স’ নীতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নীতি অনুযায়ী, টিকা না নেওয়া স্কুল কর্মচারীদের অব্যাহতি চাইতে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুরোধ জমা দিতে হবে। অনুরোধের সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত চাইলে শিক্ষকেরা পে-রোলে (মজুরি তালিকায়) থাকতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষা বিভাগের যেসব কর্মী এখনো আবেদন করেননি এবং ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকার অন্তত একটি ডোজ নেননি, তাঁদের পর দিনই পে-রোল থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষা বিভাগের কর্মচারীদের এখন নতুন নীতির আওতায় পদত্যাগ করার বিকল্প রয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে টিকা নিয়ে ফিরে আসার সুযোগও রয়েছে। অথবা তাঁরা ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিনা বেতনে বর্ধিত ছুটি নিতে পারবেন বলে শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
নতুন নীতি অনুযায়ী, কর্মীদের চিকিৎসাজনিত রেকর্ড এবং ধর্মীয় বিশ্বাস নির্ণয়ের প্রক্রিয়ায় লিখিত প্রমাণ দরকার হবে। ‘ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক বা দার্শনিক’ বিশ্বাসের জন্য কোনো কর্মীকে টিকা প্রদান থেকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
ইউএফটি শিক্ষা বিভাগের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক করার আইনগত কোনো অধিকার সিটির আছে কিনা—এ নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নগর কর্তৃপক্ষ প্রদান করেনি বলে তারা অভিযোগ করেছে।
স্কুল বোর্ডের চ্যান্সেলর মাইশা পোর্টার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং কর্মীদের সুরক্ষার জন্য টিকার আদেশ কার্যকর করা হয়েছিল। আগামী সপ্তাহে প্রতিদিন শহরজুড়ে স্কুলগুলোতে ৭০০-এর বেশি টিকা দেওয়ার সাইট খোলা থাকবে এবং শিক্ষা বিভাগের কর্মচারীদের যত দ্রুত সম্ভব টিকা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হবে।
নিউইয়র্ক নগরের তথ্য অনুযায়ী, ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগের কর্মীদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ লোক এখনো কোনো টিকা নেননি।