'আমাদের একটা আঞ্চলিক কথা আছে-বেড়ায় ক্ষেত খেয়ে ফেলেছে। এখানেও এমনটি হয়েছে। যার অধীনে আছে, যাকে পাহারায় রেখেছি সেই যদি এই কাজটা করে সেটি কষ্টের ও হতাশার। যাকে দায়িত্ব দেয়া হলো, সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি এরকম একটি ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন, তাহলে তো আমরা একটু ফলসে পড়ি। তবে, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে কোন পরীক্ষা হবে না। প্রশ্নফাঁস করে এটা মনে করার কোন কারণ নাই যে পার পেয়ে যাবো। আমাদের শৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।'
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের এসএসসির ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দৈনিক আমাদের বার্তাকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ইতোমধ্যে ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানসহ ছয়জন শিক্ষক-কর্মচারী গ্রেফতার হয়েছেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ভূরুঙ্গামারীর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমানকে।
এ ঘটনায় অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে কিনা জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, অবশ্যই থাকতে পারে। প্রথম পরীক্ষা শুরুর আগেই সর্টিং করে দেয়া হয় কোন কেন্দ্রে কতটা প্রশ্ন যাবে। সেই সর্টিংয়ের সময় কেন্দ্রসচিব সরাসরি সে কাজে জড়িত থাকেন। সেই সর্টিংয়ের সময় কেন্দ্র সচিব অন্য দিনের ছোট ছোট যে বান্ডেলগুলো থাকে পঞ্চাশটা বা বিশটা প্রশ্নের, সেগুলো তিনি হয়তো অন্যদের অগোচরে নিয়ে গেছেন। আপনারা জানেন এ বান্ডেলগুলো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের প্যাকেটে থাকে, যা কাটা ছাড়া বের করার কোন পথ নেই। সেখানে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছিলেন, থানা পর্যায়ের আরও যারা কর্মকর্তা ছিলেন, তারা সংশ্লিষ্ট কিনা তা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।
তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। সেখানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার গাফিলতির কথা উঠে এসেছে। তিনি প্রশ্ন সর্টিংয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। সে কারণে আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। আমরা এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছি।
অধ্যাপক নেহাল আহমেদ আরও বলেন, আমরা কিন্তু প্রশ্নফাঁসের কথা শোনার সাথে সাথে অ্যাকশনে যাচ্ছি। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের পরীক্ষাগুলো আমরা বাতিল করে দিচ্ছি। যশোর বোর্ডের বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার এমসিকিউ প্রশ্ন ভুল করে চারটি কেন্দ্রে চলে গেছে। সে পরীক্ষাটি কিন্তু বাতিল করে নতুন করে নেয়া হচ্ছে। দিনাজপুর বোর্ডের ঘটনায়ও পরীক্ষাগুলো বাতিল করে নতুন করে নেয়া হচ্ছে। যখনই খবর আসবে আমরা কিন্তু পুরো পরীক্ষা বাতিল করে দেবো, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডগুলোর কিন্তু সে সক্ষমতা আছে। যারা এ কাজগুলো করে তাদের কিন্তু পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা পরীক্ষাই বাতিল করে দিচ্ছি। যারা এই ধ্যান ধারণায় থাকে যে, প্রশ্নফাঁস করে একটা সুবিধা নেবো, সেটার কিন্তু সুযোগ নেই।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।