রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নার্সিং পরীক্ষায় অনিয়ম, নীরব কর্তৃপক্ষ - দৈনিকশিক্ষা

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নার্সিং পরীক্ষায় অনিয়ম, নীরব কর্তৃপক্ষ

রাজশাহী প্রতিনিধি |

রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশনে (সমীক্ষণ) ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনের নেতৃত্বে এসব অনিয়ম হয়েছে। 

জানা গেছে, পরীক্ষায় যিনি যে বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন করেছেন, তিনিই আবার একই বিষয়ের প্রশ্নের মডারেশন করেছেন। এ ছাড়া একেকজন শিক্ষক পাঁচ থেকে সাতটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশন করেছেন। খোদ অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনই সাতটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন এবং মডারেশন করেছেন। আবার একই কলেজের শিক্ষক তার স্ত্রী নাজমা বেগম চারটি এবং সাবেক অধ্যক্ষ হেলাল উদ্দিন পাঁচটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশন করেছেন। এতে করে প্রশ্নের মান ও গোপনীয়তা রক্ষা হয়নি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। নার্সিং বিএসপির প্রশ্ন প্রণয়নসহ নার্সিং পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনিয়মের অভিযোগ পেলেও রামেবি কর্তৃপক্ষ রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামেবির অধিভুক্ত বিভিন্ন নার্সিং প্রতিষ্ঠানের পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং কোর্সের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ২০২০ সালের চূড়ান্ত পরীক্ষা রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন কেন্দ্রে গত ১৬ এপ্রিল শুরু হয়েছে। রামেবি অধিভুক্ত বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেন পরীক্ষা কমিটির সভাপতি। তিনি প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্ন প্রণয়ন এবং মডারেশনের জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের নামের তালিকা করেন। অভিযোগ উঠেছে এ তালিকা তৈরিতে তিনি ব্যাপক স্বেচ্ছাচারিতা, পক্ষপাত ও অনিয়মের আশ্রয় নেন। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে তিনি একই শিক্ষককে প্রশ্ন প্রণয়নকারী ও মডারেটর করেছেন। জানা গেছে, সরকারি নার্সিং কলেজগুলোতে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক থাকলেও তাদের বাদ দিয়ে মঞ্জুর হোসেন প্রাইভেট নার্সিং কলেজের শিক্ষকদের প্রশ্ন প্রণয়ন ও সমীক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছেন। আর একেকজন পাঁচ থেকে সাতটি বিষয়ে প্রশ্ন প্রণয়ন ও মডারেশনের কাজ করায় প্রশ্নের মান রক্ষা হয়নি। এসব প্রশ্ন সাজেশন আকারে শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে সহজেই চলে গেছে। 

অন্যদিকে বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ নিজ কলেজে কেন্দ্রের প্রধান হলেও দায়িত্ব পালন না করে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন কলেজ কেন্দ পরিদর্শন করেছেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীরা রামেবির ভিসির কাছে টাকার বিনিময়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া ও নকলে সহায়তা করার অভিযোগ করেছিল। মঞ্জুর হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মজীবী নার্সদের ভর্তির সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, রামেবির সাবেক উপাচার্য ডিনকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য আবারও অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেনকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মঞ্জুর হোসেন বলেন, এই বিষয়টি আমি কিছু জানি না। তবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমাকে সাত বিষয়ে সেটার-মডেটর করেছেন। তাই আমি কাজ করছি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কেন আমাকে সাত বিষয়ে সেটার-মডেটর করেছেন, সেটি তিনি ভালো জানেন। তবে রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হাবিব অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে পরীক্ষা কমিটিকে দায়ী করে বলেন, কমিটি যেভাবে আমাদের বলেন আমরা সেভাবে চিঠি ইস্যু করি। সামনের দিনগুলোতে আর এমনটা হবে না। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ আমরা পেয়েছি যার কারণে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.018573045730591