রাবির শিক্ষকদের হয়রানি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হকের বিরুদ্ধে দুই নারী সহকর্মীকে ‘অশালীন অঙ্গভঙ্গি’ প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া মঙ্গলবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

তবে বিষয়টি কেন্দ্র করে বিভাগের শিক্ষকদের দুটি গ্রুপ পাল্টাপাল্টি চিঠি দিয়েছেন উপাচার্য বরাবর। একপক্ষ অধ্যাপক এনামুল হকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। অন্যপক্ষ বলছে, অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ঘটনা সত্য নয়। বিভাগের স্বার্থে তারা উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিযুক্ত অধ্যাপক এনামুল হক বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

অভিযোগে বিভাগীয় সভাপতি উল্লেখ করেন, ‘গত ২১ মে দুপুরে বিভাগের সভাপতির অফিস কক্ষে অন্য শিক্ষকদের সামনেই অধ্যাপক এনামুল হক সহকর্মী নারী শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে অশোভন এবং যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও ভাষা ব্যবহার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা হয়। এ সময় তাকে ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হলে তিনি আবারও অশোভন আচরণ করেন এবং অশালীন ও অকথ্য ভাষায় যা করার করতে বলেন।’ বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে তিনি তার এ আচরণের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়ার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সহকর্মীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এমন অশালীন আচরণ করেন। পরে বিভাগের সভাপতি হিসেবে আমি তাকে বললে তিনি ফের এমন আচরণ করেন। এ জন্য অভিযোগ দিয়েছি। একজন অধ্যাপকের কাছ থেকে এমন আচরণ লজ্জাজনক।’

একই দিন বিভাগের ৯ জন শিক্ষক বিভাগের সভাপতির অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ঘটনার বর্ণনা করে অধ্যাপক এনামুলের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। 

এদিকে বুধবার (২৪ মে) বিভাগের সাত শিক্ষক উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়ে দাবি করেন ৯ শিক্ষকের দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ঘটনা সত্য নয়। বিভাগের অভ্যন্তর একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। বিভাগের অভ্যন্তরীণ ঘটনা বিভাগেই নিরসন হওয়া উচিত। এটা বিভাগের পঠন-পাঠনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে তারা উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 

দুপক্ষের চিঠিতে একই শিক্ষকের স্বাক্ষর

এদিকে শিক্ষকদের দুটি গ্রুপের চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে সহযোগী অধ্যাপক আশিক শাহরিয়ারের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২৩ মে আমি একাডেমিক কমিটির মিটিংয়ে ছিলাম না। পরে সভাপতি ম্যাম ঘটনাটি জানলে আমি ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করি। তবে বিভাগের অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, বিষয়টি যেভাবে আমাকে বলা হয়েছে তেমনটি নয়। তাই আমি পরবর্তী সময়ে ম্যামকে আমার অবস্থানের কথা জানিয়েছি। একই সঙ্গে আমরা কয়েকজন শিক্ষক বিষয়টি সমাধানে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করে চিঠি দিয়েছি।’

তবে যৌন হয়রানির বিষয়টি অস্বীকার করে এনামুল হক বলেন, ‘সবারই কিছু না কিছু ভুল থাকে। আমার ভুলগুলো আলোচনার টেবিলে আনা হলে আমি অন্যদের ভুলও তুলে ধরবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ ইতোমধ্যে লিগ্যাল সেলে পাঠানে হয়েছে। সেখান থেকে যৌন হয়রানির সেলে যাবে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের মে মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের মে মাসের এমপিওর চেক ছাড় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের মে মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের মে মাসের এমপিওর চেক ছাড় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫ দাবি সরকারি কর্মচারীদের - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫ দাবি সরকারি কর্মচারীদের শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ দাবির অডিও ফাঁস - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ দাবির অডিও ফাঁস এমপিও শিক্ষকদের বেতন বাড়ছে না - dainik shiksha এমপিও শিক্ষকদের বেতন বাড়ছে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ফোন - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের ফোন স্কাউটের আড়ালে শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত-শিবির - dainik shiksha স্কাউটের আড়ালে শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াত-শিবির please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.019773006439209