রোজায় প্রাথমিকের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে মন্ত্রণালয় - দৈনিকশিক্ষা

রোজায় প্রাথমিকের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে মন্ত্রণালয়

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিশু বেড়ে ওঠে বাবা-মাকে দেখে। বাবা-মা ভালো হলে, নেককার মানুষ হলে, সন্তানের ওপর এর প্রভাব পড়ে। তাদের আদর্শ-চরিত্র শিশু মনে গভীরভাবে দাগ কাটে। কোনো বাবা-মা চান না তাদের সন্তান সঠিক পথ ছেড়ে ভুল পথে যাক। সন্তান ভুল পথে গেলে বাবা-মার জন্য এর চেয়ে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।

সন্তান বখাটে হয়ে যাওয়ার পুরো দায়িত্ব বাবা-মার নয়। এজন্য সামাজিক পরিবেশ, বিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। প্রত্যেক ধর্মের অনুশীলনের মাধ্যমে শিশুরা নৈতিক শিক্ষা অর্জন করে থাকেন। আমাদের সন্তান বখাটে হয়ে যাওয়া সম্পর্কে নবীজি (সা:) বলেছেন, প্রতিটি মানবশিশু একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে পৃথিবীর বুকে আসে। কিন্তু চারপাশের পরিবেশ, সমাজ ও বাবা-মার কারণে তার সুন্দর ভবিষ্যত যদি অসুন্দর হয়ে যায়, তবে সকলকে কেয়ামতের দিন আল্লাহ অবশ্যই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। এ প্রসঙ্গে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) পরামর্শ দিয়েছেন, ছোট বয়স থেকেই সন্তানকে ধর্মীয় অভ্যাসে গড়ে তোলার জন্য। তাহলে বড় হলে সে ধার্মিক ও বাবা-মার বাধ্য সন্তান হবে। সুনাগরিক হয়ে সমাজ, দেশ ও দশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখবেন। ইসলাম ধর্মের প্রধান ভিত্তি মধ্যে নামায, রোজা অন্যতম। আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষা খুব বেশি প্রয়োজন। নামায-রোজা শিশুকাল থেকে করলে ধীরে ধীরে বড় হয়ে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। নামাজে প্রতিদিন পাঁচবার অজু করার ফলে শরীর পাক-পবিত্র থাকে। শরীর ও মন সতেজ থাকে। এতে দেহে ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা দূর হয়। ফলে নামাজী ব্যক্তি সহজে রোগে আক্রান্ত হয় না। পাশাপাশি ধনী, দরিদ্র, প্রভাবশালী ব্যক্তি একই কাতারে নামায পড়ে বিধায়, শৈশব থেকে তাদের মাঝে অহংকারবোধ জাগ্রত হয় না। সকলের মাঝে ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে উঠে। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর অগাধ বিশ্বাস ও আনুগত্য সৃষ্টি হয় বিধায়, নামাজী ব্যক্তি সৎচরিত্রবান হয়ে সমাজে ও রাষ্ট্রের কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকে। পাশাপাশি সারাদিন অনাহারে থেকে রোজা রেখে ধনবান ব্যক্তি অনাহারীর কষ্ট উপলব্ধি করতে পারে। এ মাধ্যমে গরিব মানুষের প্রতি সহানুভূতি জাগ্রত হয়।

রোজাদার ব্যক্তি সারাদিন রোজা রেখে সাধারণত নানা পাপাচার-খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকেন। শৈশব থেকে নামায-রোজা করলে শিশুরা নৈতিক শিক্ষা পেয়ে সুনাগরিক হিসাবে দেশ-সমাজের আর্শীবাদ হয়ে ওঠে। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশুদের যেমন বিকাল বেলা খেলাধুলা বা বিনোদনের সুযোগ নেই। তেমনি সকাল বেলা ধর্মীয় শিক্ষা কায়দা, আমপারা ও কোরান শিক্ষার সুযোগও নেই। একমাত্র রোজার মাসে সাধারণত মসজিদে-মক্তবে বা বাড়িতে হুজুর রেখে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে থাকেন। আমাদের বিশাল কঠিন হৃদয়ের অধিকারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পবিত্র রমজান মাসে শিশুর রোজা রাখা, নামাজ পড়ার অভ্যাস তৈরি করে নৈতিক সুশিক্ষা পেয়ে গড়ে তোলা থেকে বঞ্চিত করেছেন। শুধু কি সকল করোনার শিখন ঘাটতি প্রাথমিকের? এ ঘাটতির শিক্ষার্থীরাতো বর্তমানে বেশির ভাগ উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। 

রোজা মাসে ১৫ দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা রেখে তারা শিক্ষার্থীর নামায, রোজা, কায়দা, আমপারা, কোরান শরীফ পড়ার বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। রোজার মাসে শিক্ষকদের নামাযের বিরতি ১৫ মিনিট। এতে সংশ্লিষ্টরা কৃপণতার কাঠিন্য প্রদর্শন করেছেন। উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাথা ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষকরা যখন বাড়িতে থাকে বা কোথাও বেড়াতে যায়, তখন প্রাথমিকের শিক্ষার্থী/শিক্ষকদের শিল্পী মমতাজের গানের মত বুক ফাইট্টা যায়। মহান সৃষ্টিকর্তা সহায় হোন। ৩০-০৩-২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার ছুটির ১ ঘন্টা পূর্বে কর্মবিরতি পালন করে এ কঠিন হৃদয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষাকে মুক্ত করার জন্য দোয়া করুন। জয় বাংলা। 

লেখক : মো. সিদ্দিকুর রহমান, সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ ও সম্পাদকীয় উপদেষ্টা দৈনিক শিক্ষাডটকম

 

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039741992950439