শিক্ষা প্রতিষ্ঠান র‌্যাঙ্কিং যেনো অব্যাহত থাকে - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান র‌্যাঙ্কিং যেনো অব্যাহত থাকে

মনোয়ার হোসেন |

দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা ‘দৈনিক শিক্ষাডটকম’ একমাত্র শিক্ষাবিষয়ক জাতীয় দৈনিক আমাদের বার্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা মহানগরীর উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর র‌্যাঙ্কিং করেছে। দেশের ইতিহাসে এমন উদ্যোগ এটাই প্রথম। এ কারণে সংশ্লিষ্ট সকল মহলে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে প্রচুর আলোচনা হয়। অনুসন্ধিৎসু শিক্ষকদের মাঝে প্রচুর কৌতূহল সৃষ্টি হয়।

র‌্যাঙ্কিংয়ের জরিপ সম্পাদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ, যারা নিজেরা মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসারে সবসময় সচেতন। এই প্রচেষ্টা কোনো প্রকার আর্থিক সহযোগিতা বা স্পন্সর ছাড়াই সম্পন্ন হওয়ায় অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।  

দৈনিক শিক্ষাডটকমের এই র‌্যাঙ্কিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করার নির্দেশকও হয়ে উঠেছে। যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানদণ্ড বা স্কেলে ওপর দিকে স্থান পেয়েছে সেগুলো আগামীতে আরো ভালো করার চেষ্টা করছে। আর যারা তালিকার ওপরের দিকে স্থান পায়নি তারা মানোন্নয়নের জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করছে। কারণ, সংশ্লিষরা এই বার্তা পেয়ে গেছেন যে, এই র‌্যাঙ্কিং চলমান থাকবে। 

প্রথমবার মান বা র‌্যাঙ্কিং নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় কেবল ঢাকা মহানগরীর উচ্চমাধ্যমিক কলেজগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কলেজগুলোর মধ্যে সরকারি, বেসরকারি ও মিশনারি পরিচালিত সব ধরনের প্রতিষ্ঠানই ছিলো। 

প্রথম র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই যেসব প্রতিষ্ঠান সুনাম অর্জন করেছে সেগুলোর অবস্থান ওপরের দিকেই রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান সার্বিক বিবেচনায় যোগ্য হিসেবেই ওপরে আছে। আর ইতোমধ্যে সুনাম কুড়োনো যে কয়টি প্রতিষ্ঠান ওপরে দিকে স্থান পায়নি, সেগুলো আগামীর জন্য তাদের অবস্থান উন্নত করার চেষ্টা করছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তার মানে, র‌্যাঙ্কিংয়ের ফল প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতাসুলভ মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই মনোভাব আমাদের পুরো শিক্ষাখাতের জন্যই অতীব আশা জাগানিয়া।  

আমরা জেনেছি, দৈনিক শিক্ষাডটকমের র‌্যাঙ্কিংয়ে কলেজগুলোর অবস্থান নির্ধারণের জন্য যেসব সূচক নির্ধারণ করা ছিলো সেগুলোর অন্যতম হলো- শিক্ষকদের মান,  খেলার মাঠ, কলেজের শৃঙ্খলা, পাঠাগার সুবিধা ও পাঠদানের জন্য নিজস্ব কিছু পদ্ধতি (যদি থাকে) আছে কি না ইত্যাদি। কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পৃথক প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে সরেজমিন পরিদর্শনের মাধ্যমে র‌্যাঙ্কিং চূড়ান্ত করা হয়। তারপরও স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন থেকে যায়, প্রশ্নপত্র কলেজের সার্বিক তথ্য অবগত হওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ছিলো কি না। 

নি:সন্দেহে এই উদ্যোগ ভবিষ্যৎ র‌্যাঙ্কিংয়ের পথ প্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত হবে। পরিসরও নিশ্চয়ই আরো বিস্তৃত হবে। এক্ষেত্রে সরকারি কলেজ, বেসরকারি কলেজ ও মিশনারি পরিচালিত কলেজ--এই তিন শ্রেণিকে একভাবে বিবেচনা না করে তিনটি পৃথক ক্যাটাগরিতে র‌্যাঙ্কিং করলেই ভালো হবে। 

আর নিশ্চয়ই এ ধরনের র‌্যাঙ্কিং শুধু কলেজ পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখা সমীচীন হবে না। স্কুল (সরকারি, বেসরকারি ও মিশনারি পরিচালিত), মাদরাসা, প্রাথমিক স্কুল, টিউটোরিয়াল বা নার্সারি স্কুল এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলগুলোরও পৃথক র‌্যাঙ্কিং হওয়া দরকার। এমনকি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরও পৃথক র‌্যাঙ্কিং হওয়া প্রয়োজন। তাহলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সম্বন্ধে ব্যাপক তথ্য পাওয়া যাবে। সেগুলোর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর মান নির্ধারণ করা যাবে। সেগুলোর উদ্দেশ্য সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। ফলে অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।  

তবে এটাও মনে রাখার প্রয়োজন, এ ধরনের জরিপে বিশেষ করে প্রাথমিক স্কুলগুলো সম্পর্কে তথ্য পাওয়া খুব সহজ হবে না। কারণ, অধিকাংশ নার্সারি লেভেল বা ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেভেল স্কুল ব্যবসায়িক ভাবধারায় পরিচালিত। আর সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রাইমারি স্কুল ও মাদরাসাগুলোতে কী রকম শিক্ষা দেয়া হয় ও শিক্ষকদের যোগ্যতা কোন পর্যায়ের তা নিয়ে বহুরকম কথা চালু আছে। তারপরেও জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যাদি অবশ্যই অভিভাবকদের উপকারে আসবে বলে আশা করা যায়। 

এখানে আর একটা বিষয় অবশ্যই উল্লেখ করা দরকার। কোনো জরিপের ফল সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। ভিন্নমত বা বিরোধী মত থাকবেই। এই ভিন্নমত বা বিরোধীমতকে ভয় পেলে কোনো কাজই এগোবে না। সৎ উদ্দেশে পরিচালিত জরিপ যে ফলাফল সামনে তুলে ধরে তা থেকে শিক্ষা নেয়ার বহুকিছু থাকে এবং তা নিজ মনোবলকে অধিকতর শক্ত করে। দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিচালিত জরিপ কলেজগুলোর যে র‌্যাঙ্কিং উপস্থাপন করলো তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এই উদ্যোগ যেনো অব্যাহত থাকে।

লেখক : মনোয়ার হোসেন, সিনিয়র সাংবাদিক 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

ঘুষ নিতে মিনিস্ট্রি অডিটরদের স্বামী, এমপিও শিক্ষকরা আতঙ্কে - dainik shiksha ঘুষ নিতে মিনিস্ট্রি অডিটরদের স্বামী, এমপিও শিক্ষকরা আতঙ্কে কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে ‘হিন্দু ছাত্রদের ওপর আক্রমণ’ বলে প্রচার - dainik shiksha কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষকে ‘হিন্দু ছাত্রদের ওপর আক্রমণ’ বলে প্রচার নিম্নমানের কাগজে ছাপা, অগ্রণীর ৫০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল - dainik shiksha নিম্নমানের কাগজে ছাপা, অগ্রণীর ৫০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ, আবেদন শেষ ৩১ ডিসেম্বর - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ, আবেদন শেষ ৩১ ডিসেম্বর চতুর্থ শ্রেণির প্রশ্নে মুজিববন্দনা, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা - dainik shiksha চতুর্থ শ্রেণির প্রশ্নে মুজিববন্দনা, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জুলাই অভ্যুত্থান: দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে লড়ছেন জাবি অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী - dainik shiksha জুলাই অভ্যুত্থান: দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে লড়ছেন জাবি অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041470527648926