লাশ নিয়ে পাওনাদারের বাড়িতে স্বজনরা - দৈনিকশিক্ষা

লাশ নিয়ে পাওনাদারের বাড়িতে স্বজনরা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি |

পাওনাদারের বাড়ির দড়জায় মরদেহ রেখে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য অভিনব প্রতিবাদ করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আলীপুরের মৃত সুনীল দাসের (৫৭) পরিবারের সদস্যরা। শনিবার (২৪ জুলাই) সকালে মরদেহ নিয়ে হাজির হয় পাওনাদার আলীপুরের ইউসুফ মুসুল্লীর বাড়িতে। লাশ নিয়ে বাড়িতে আসার খবর পেয়ে দ্রুতই সঠকে পড়ে ইউসুফ মুসুল্লী ও তার পরিবারের সদস্যরা। মরদেহের সামনে বিলাপ করতে থাকে মৃতের স্বজনরা। 

বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও শতশত মানুষ ভিড় করে মুসুল্লী বাড়িতে। খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে আসলেও ইউসুফ মুসুল্লীকে না পাওয়ায় দুপুর পর্যন্ত এভাবেই পড়ে থাকে সুনীল দাসের মৃতদেহ। তবে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, বিষয়টি মানবিক হওয়ায় দ্রুতই মরদেহ সৎকার ও ঘটনা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

মৃত সুনীল দাসের স্ত্রী মাদুরী দাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কয়েক বছর আগে নয় লাখ টাকা দিয়ে তার স্বামী আলীপুরের ইউসুফ মুসুল্লীর কাছ থেকে তিন শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এক পর্যায়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পড়ে সুনীল দাস। এতে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে। এ সময় সুনীল দাস জমি বুঝিয়ে না দিলে তার দেয়া টাকা ফেরত চায় ইউসুফ মুসুল্লীর কাছে।

কিন্তু সে জমি বা টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। এ নিয়ে দুই বছর আগে স্থানীয় লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদে একাধিক সালিশ বৈঠক হয়। সালিশে ইউসুফ মুসুল্লী আট লাখ দেয়ার কথা স্বীকার করলেও দুই বছরেও টাকা পাননি সুনীল। এতে টাকার অভাবে ক্যান্সার আক্রান্ত সুনীল বিনা চিকিৎসায় গত শুক্রবার রাতে বাড়িতে মৃত্যুবরণ করে। তাই পরিবারের সদস্যরা টাকা আদায় ও এই মৃত্যুর জন্য ইউসুফ মুসুল্লীকে দায়ী করে সুনীলের মরদেহ তার বাড়ির সামনে রেখে প্রতিবাদ করে।

লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আনছার মোল্লা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, দুই বছর আগে তিনি এ বিষয়টি নিয়ে সালিশ করেছিলেন। সালিশে ইউসুফ মুসুল্লী টাকা পাওনার বিষয়টি স্বীকার করে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে সাত লাখ টাকা ও ১৫ দিনের মধ্যে নগদ এক লাখ টাকা বিষয়ে একমত হন। কিন্তু এখনো টাকা পরিশোধ না করায় আজ সুনীলের পরিবার তার মৃতদেহ ইউসুফের বাড়ির সামনে রেখে দেয় টাকার জন্য। তারা বিষয়টি দেখছেন কিভাবে সমাধান করা যায়।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি শোনার পরই তারা ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষের সাথে কথা বলেছেন। ইউসুফ মুসুল্লীর পরিবার টাকা পাওনার বিষয়টি স্বীকার করে আপাতত কিছু টাকা দিতে রাজি হয়েছেন। তাই মৃতের স্বজনদের সাথে কথা বলে তারা মরদেহ সৎকারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আর মৃতের স্বজনরা যদি তাদের কাছে আইনগত সহায়তা চায় তাদের সহযোগীতা করা হবে। 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউসুফ মুসুল্লী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার কাছে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পাবেন সুনীল দাস। এর আগে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। বাকি টাকাও শোধ করা হবে। তবে তিনি পালিয়ে যাননি, এলাকার বাইরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, বিষয়টি শোনার পরপরই স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মহিপুর থানা পুলিশকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বলেছেন। সেক্ষেত্রে মৃতদেহ সৎকারের খরচ প্রশাসন বহন করবে। আর টাকা পাওনার বিষয়টি দুইপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029809474945068