ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্থানীয় সর্ববৃহৎ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি, বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদরাসা, বোয়ালমারী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই।
জানা যায়, উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে শহীদ মিনার থাকলেও বেশিরভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নেই। এ উপজেলায় অবস্থিত ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬৮টিতে ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার নেই।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা এবং উদাসীনতার কারণে এত বছরেও এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি বলে অভিযোগ।
বোয়ালমারী পৌর সদরে অবস্থিত বোয়ালমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘ ৪৮ বছরে গড়ে ওঠেনি কোন শহীদ মিনার। উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোয়ালমারী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়েও কোন শহীদ মিনার নেই।
এলাকার বুদ্ধিজীবীদের মতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ-শিক্ষক-এলাকাবাসীর আন্তরিকতা থাকলে স্থানীয়ভাবে অল্প খরচেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা যেত।
উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের মজিবর রহমান আমিন রেনিনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিদ্যালয়েও শহীদ মিনার নেই। এটা একটা জাতীয় বিষয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরও অনেক আগেই সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণ করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
১২ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত মাধ্যমিক বিদ্যালয় বোয়ালমারী জর্জ একাডেমিতে কোন শহীদ মিনার না থাকা প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা সকল জাতীয় দিবসগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি এবং উপজেলাভিত্তিক কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নেই। ২১ ফেব্রুয়ারি উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীসহ পুস্পস্তবক অর্পণ করি। বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই কেন -এ প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দেননি।
বোয়ালমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু আহাদ মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রত্যেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পর্যায়ক্রমে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। এজন্য সম্প্রতি বরাদ্দ দেয়া শুরু হয়েছে। বোয়ালমারী উপজেলার জন্য এখনো কোন বরাদ্দ আসেনি। আগামী ২-৩ বছরের মধ্য দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নির্মিত হবে।
বোয়ালমারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক নিজ উদ্যোগে শহীদ মিনার করেছেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ চলছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।