রূপালী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বেতন-ভাতা দেয়ার আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এ খবরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শিউর ক্যাশে বেতন দেয়কে অনিরাপদ ও ভোগান্তিকর বলে অভিহিত করেছেন। এজন্য এখনকার নিয়মে ব্যাংকের মাধ্যমেই বেতন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে তা মোটেও ভালো হবে না। কারণ মোবাইলের মাধ্যমে বেতন পাওয়া অনিরাপদ। এতে শিক্ষকরা হয়রানির শিকার হবেন।
গত বুধবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বেতন দেওয়ার অনুরোধ করেছেন ব্যাংকটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন, আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বর্তমানে বিকাশের মাধ্যমে নানাভাবে প্রতারণা হচ্ছে। এখন শিওর ক্যাশেও সে সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মোবাইল হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হয়। সে কারণে আমরা চাই, ব্যাংকের মাধ্যমেই বেতন দেওয়া অব্যাহত থাক।
এদিকে রূপালী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বেতন-ভাতা দেয়ার আলোচনার খবর নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। মোবারক হোসাইন নামে একজন শিক্ষক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শিওর ক্যাশের যন্ত্রণা আমরা চাই না। বেতনের টাকা তোলার জন্য দোকানে গিয়ে দাড়াবো এটা কেমন কথা, আবার বেতনের টাকা থেকে কমিশন কাটা যাবে। কোন প্রয়োজন নেই। জাতি গড়ার কারিগরদের আপনারা কোথায় নিয়ে দাড় করাতে চাচ্ছেন, বুঝতে পারছি না। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এইরকম সিদ্ধান্ত যেন না হয়।
সেলিম উদ্দিন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শিওর ক্যাশে বেতনকে না বলুন।’ এছাড়া মো. জহিরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘শিক্ষকের বেতন ভোগ করার জন্য শিউরক্যাশ পরিকল্পনা করছে। STOP-শিউরক্যাশ।’
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের চলতি অর্থবছরের জন্য উপবৃত্তি প্রদানে বুধবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রূপালী ব্যাংকের চুক্তি সই অনুষ্ঠান হয়। সেখানে শিওর ক্যাশে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার আবেদন করেন রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। তিনি বলেন, আমাদের উপবৃত্তি প্রদানের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা যেন টিচারদের বেতনও দিতে (শিওর ক্যাশে) পারি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন তুলতে বর্তমানে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের সমস্যা সমাধানে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা প্রলাপ বকছেন।