শিক্ষককে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিলেন ইবি শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষককে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিলেন ইবি শিক্ষার্থীরা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অধ্যাপক বাকী বিল্লাহকে (বিকুল) হেনস্তা করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। ছাত্র আন্দোলনে প্রকাশ্যে বিরোধিতার অভিযোগ তুলে তাঁকে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এ নিয়ে সরকার পতনের পর দ্বিতীয়বারের মতো ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করা হলো বাংলা বিভাগের এ শিক্ষককে। তিনি আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরাম ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সমর্থক। বিভিন্ন সময়ে তাঁকে আওয়ামী লীগপন্থী মিছিলে অংশ নিতে দেখা গেছে। এর জেরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং তাঁকে ক্যাম্পাস ত্যাগের দাবি জানায়। 

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্পাসের রবীন্দ্র-নজরুল কলাভবনে এ ঘটনা ঘটে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে ক্যাম্পাসে বাংলা বিভাগের একটি সভায় অংশ নেন বাকি বিল্লাহ। এ সময় শিক্ষার্থীরা বাইরে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তখন বিভাগের সভাপতি বেলা দুইটা পর্যন্ত সময় চাইলে শিক্ষার্থীরা অস্বীকৃতি জানান। পরে এক শিক্ষকের মধ্যস্থতায় তাঁকে সভাকক্ষ থেকে বের করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে ক্যাম্পাস থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা মিছিল করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থানের সময় বাকী বিল্লাহ প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন। ওই সময়ের আন্দোলনকে নৈরাজ্য আখ্যা দিয়ে করা মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। এ সময় তিনি আন্দোলনকে প্রতিহত করতে ও প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ছাত্রদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মিছিল করা শিক্ষকদের ওপর হামলার প্ররোচনা দেন ও তাঁদের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠান। আন্দোলনের বিরুদ্ধে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণাও চালান।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক মুখলেসুর রাহমান  বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সরাসরি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন শিক্ষক বাকী বিল্লাহ। ছাত্রদের পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করতে তিনি অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা যা করেছেন, তাতে সংহতি জানানো হয়েছে। তিনি ছাত্রদের পাশে না থেকে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে যা করেছেন, তাতে তিনি শিক্ষক হিসেবে নৈতিকতা হারিয়েছেন।’

এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর বিশিষ্ট কলামিস্ট ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল মুঈদের স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে বাকী বিল্লাহকে হেনস্তা করা হয়। সেদিনও তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

বাকী বিল্লাহ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অমূলক। আমি একটা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে ছিলাম। সেখানে থাকার সময় ছাত্রদের কোনো ক্ষতি হয়, সেটা কখনোই করি নাই। আমি আওয়ামী আদর্শের সৈনিক। আজকের ঘটনায় আমি ভাষাহারা, ব্যথিত। আমি কষ্ট পেলেও শিক্ষার্থীদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেনবলেন, ‘গণতন্ত্রে প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষ–বিপক্ষ নেওয়ার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কোনো শিক্ষক যদি সুনির্দিষ্ট কোনো অন্যায় করে থাকেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আছে, উপাচার্য আছেন। সেখানে অভিযোগ দিতে পারে। যেসব শিক্ষার্থী আজ একজন অধ্যাপককে হেনস্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগে বাধ্য করেছে, তাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করতে গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে।’

শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা - dainik shiksha বেতন ও বিবেকের স্বাধীনতায় পিছিয়ে বাংলাদেশের শিক্ষকরা জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি - dainik shiksha জাতীয়করণসহ শিক্ষকদের ১০ দাবি দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল - dainik shiksha দেশের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা শিক্ষাব্যবস্থা: ফখরুল কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি - dainik shiksha কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন দাবি তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha তরুণ প্রজন্ম অপরাজনীতিতে লিপ্ত: শিক্ষা উপদেষ্টা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050449371337891