হঠাৎ শিক্ষকদের পক্ষে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা শুরু করেছেন ফজর আলী। নানা অভিযোগে ফজর আলীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল কয়েকবছর আগে। একজন সাবেক শিক্ষাসচিবের হাতেপায়ে ধরে রক্ষা পেয়েছিলেন সে যাত্রা। এরপর আবার শুরু করেন দুর্নীতি। করোনা শুরুর আগে অডিট শুরু হয়। করোনার কারণে কয়েকমাস বন্ধ থাকে অডিট। আবার শুরু হয় অভ্যন্তরীণ অডিট। একে একে চিহ্নিত হয় দুর্নীতি। অডিট থামাতে ফজর আলী গোপনে চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক দিয়ে অনু্রোধ করান। করেন রাজনৈতিক তদবিরও। কিন্তু কোনো লাভ হয়না। তার চাকরির মেয়াদও শেষের দিকে। ফজর আলীর সর্বশেষ চেষ্টা ছিলো আরো দু্ই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগলাভ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাফ বলে দিয়েছেন ফজর আলীকে কয়েকবছর আগে একবার মাফ করা হয়েছিলো। আর না। এবারও তাকে জেলে দেয়া হয়তো হবে না, তবে দুর্নীতির খতিয়ান প্রকাশ হবে শিগগিরই। এসব খবর নিশ্চিত হওয়ার পর ফজর আলীরা গত কয়েকমাস ধরে সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষে খুব গরম গরম কথা বলা শুরু করছেন কথিত পত্রিকার কথিত টকশোতে। এইসব পত্রিকা ফজর আলীরা নিজেরাই বানান। নিজেরাই কথিত টকশো করেন, নিজেদের ফেসবুক টিভিতে নিজেরাই অতিথি হয়ে আসেন! যার পুরোটাই প্রতারণা। ভালো ও রুচিশীলরা ফজর আলীদের এসব কৌশল ধরে ফেলেছেন অনেক আগেই। সাংবাদিকতা পেশাটাকেও ক্ষতি করেন এইসব ফজর আলীদের কথিত ফেসবুক পেপার আর ফেসবুক টিভি আর কথিত টকশো। ফজর আলীদের কথিত পেপারের কোনো ভিত্তি নেই, সামাজিক স্বীকৃতি নেই, প্রেসক্লাব বা সাংবাদিক ইউনিয়নের সংশ্লিষ্টতা নেই। নিজেরা দুনীতি করে শিক্ষকতার মহান পেশাকেও তারা সমাজে হেয় করেন আবার পত্রিকা খুলেও কার্ড বিক্রি করে সাংবাদিকতা পেশারও ক্ষতি করেন। ফজর আলীদেরকে দুনীতিবাজ শিক্ষক নেতাদের বানানো ফেসবুক টিভিতেও কথা বলতে দেখে শিক্ষকরা ছি: ছি: করেন। এসব করে ফজর আলীরা অবসরে চলে যান আর চুবি করা টাকা দিয়ে বাড়ী, গাড়ী করেন।
এই পদ্ধতি বেশ পুরনো। ফজর আলীদের উত্তরসূরিরা একই কাজ করে আসছেন গত ২০/৩০ বছর ধরে। সেলিম, ফারুকরা, মুগিছ, বাশাররাও একই পথেরে অগ্রপথিক। ফজর আলীরা পদে/ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতি করেন, সাধারণ শিক্ষকদের দৌড়ের ওপর রাখেন, কেউ কেউ নির্যাতনও করেন। কিন্তু অবসরের আগে আগে খুব ভালো হয়ে যাওয়ার ভান করেন তারাই। হঠাৎ করেই সাধারণ শিক্ষকদের দরদি সাজেন। এবং সমমনা কয়েকজনকে নিয়ে একটা শিক্ষক সমিতি ঘোষণা দিয়ে নিজেই সভাপতি হয়ে যান। কোনো নির্বাচন হয়না এসব সমিতিতে। এরপর ত্রিশ বছরের কর্মস্থলে নিজের করা দুর্নীতির কারণে জেল জরিমানা শুরু হলে সমিতির কর্মীদের দিয়ে ফেসবুকে লেখান, বিবৃতি দিয়ে বলান, ‘স্যার সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষে কথা বলেন তাই তার ওপর এই চাপ, বরখাস্ত, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া, তার পেছনে লেগেছে ইত্যাদি।’ এহেন ফজর আলীদের চরিত্র ও কার্যক্রম অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে গত ১১ বছর ধরে তুলে ধরছে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম।
আমরা সাধারণ শিক্ষকরা দেখেছি, ফজর আলী নিজে কাজের চেয়ে কথায় পটু হওয়ায় তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মান ও পাবলিক পরীক্ষার ফল দুটোই তলানীতে। সব কিছু নিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমে ফজর আলী গংদের হঠাৎ নেতা বনে যাওয়ার নেপথ্য কাহিনী জানতে চাই, দেখতে চাই। আশাকরি দৈনিক শিক্ষা আমাদের নিরাশ করবে না। কারণ, দৈনিক শিক্ষাই একমাত্র শিক্ষা বিষয়ক পত্রিকা যেখানে সবাই পেশাদার সাংবাদিক। জেল-জুলম-মমামল-হামলার ভয়ে ভীত নয়। ফজর আলীদের মুখোশ খুলে দিতে অভ্যস্থ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আরো পড়ুন:
►চারমাস আগে অবসর সুবিধার টাকা হাতে পেয়েছেন বাশার হাওলাদার
►অবৈধভাবে সেলিম ভূইয়াকে কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা দেয়া, খতিয়ে দেখছে মন্ত্রণালয়