শিক্ষকদের পদসৃজনে বাধা দেয়া সেই অধ্যক্ষ বরখাস্ত - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকদের পদসৃজনে বাধা দেয়া সেই অধ্যক্ষ বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পদসৃজনের কাজে বাধা সৃষ্টি করা দেয়া পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের সেই অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানকে অবশেষে বরখাস্ত করা হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মামলায় তাকে গত ২৬ জানুয়ারি জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাই,বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) তাকে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের দুর্নীতি ও নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দৈনিক শিক্ষাডটকম।

অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানকে অপসারণ করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন ও নানা কর্মসূচি পালন করেছেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাই, সরকারিকৃত কলেজের এ অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন কর্মকর্তারা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়ও এমনটি বলা আছে। তাই, তাকে জেলাহাজতে পাঠানোর দিনে থেকে অর্থাৎ ২৬ জানুয়ারি থেকে ভুতাপেক্ষ বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে, আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়।

আরও পড়ুন: চাটমোহর কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

চাটমোহর সরকারি কলেজে শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত

অধ্যক্ষ মিজানের অপসারণ দাবিতে উত্তাল চাটমোহর

অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে সরকারিকৃত চাটমোহর কলেজে অচলাবস্থা

সরকারিকৃত চাটমোহর কলেজের অধ্যক্ষের যত অনিয়ম

চাটমোহর সরকারি কলেজশিক্ষক কক্ষ তালাবদ্ধ, অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান

সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানায়, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। মিজানুর রহমান তদন্ত কর্মকর্তাদের কোনো রকম সহযোগিতা করেননি, বরং নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন। তদন্ত কমিটির সাথে অধ্যক্ষের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ অসদাচরণ ও তদন্ত কাজে নানাভাবে বাধা দেয়ার চেষ্টা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পেয়েছে।

এছাড়া কলেজটি নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারী ও অধ্যক্ষের মধ্যে বিভক্তি, এলাকায় অধ্যক্ষের অপকর্ম বিরোধী কর্মসূচি পালন ও উত্তেজনাকর পরিবেশের বিষয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমসহ দেশের জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কলেজটিতে শিক্ষাদান কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়ে এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারিকরণের কাজ অনিশ্চিত হয়ে যায়। শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলে গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ মিজানুর। গত ২৬ জানুয়ারি তাকে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। 

জানা গেছে, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ঈশ্বরদীর দাশুরুরিয়া কলেজে প্রভাষক হিসেবে প্রথম এমপিওভুক্ত হন ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে। শেষ এমপিও ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে। দাশুরিয়া কলেজের তার চাকরির অভিজ্ঞতা ছিল নয় বছর নয় মাস। দাশুরিয়া কলেজে মাত্র ৯ বছর ৯ মাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ও সহকারী অধ্যাপকের অভিজ্ঞতা না থাকলেও একই বছরের ১৫ আগস্ট নিয়ম বহির্ভূকভাবে পাবনার ফরিদুপরের দিঘুলিয়া এ জেড হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। সে তারিখ থেকেই এমপিওভুক্ত হন তিনি, যা নিয়ম বহির্ভূত।

গত ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জুলাই চাটমোহর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পরেই ব্যাপক দুর্নীতি শুরু করেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান কলেজ সরকারি হওয়ার আগে পরিচালনা কমিটিকে না জানিয়ে ব্যাক ডেটে রেজুলেশন টেম্পারিং, কাটাকাটি, ঘষামাজা ও কম্পিউটার দ্বারা স্ক্যান করে জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত ২১ জন ভুয়া শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে। নিয়োগের সময় তিনি প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। 

২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ আগস্ট থেকে সারাদেশের আরও ২৭১টি কলেজের সাথে পাবনার চাটমোহর ডিগ্রি কলেজ সরকারি হয়। পরে ২৭ আগস্ট বেসরকারি আমলে গভর্নিং বডি বিলুপ্ত হয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলেজ পরিচালনার দায়িত্ব পান। সেই দিন থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি অধ্যক্ষ দুই লাখ ৯১ হাজার ৭৯০ টাকার অর্থিক অনিয়ম করেছেন বলে জানা গেছে। 

অভিযোগ রয়েছে, বিজ্ঞান গবেষাণাগারের যন্ত্রাপতি ও দ্রব্যাদি ক্রয়, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও সেমিনার লাইব্রেরির বই কেনা, প্রশংসাপত্র বাবদ বিনা রশিদে জনপ্রতি ৩৪০ টাকা হারে আদায় করেন অধ্যক্ষ। ভর্তি ও ফরম পুরণে সরকারি নির্ধারিত ফিয়ের অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। এ নিয়ে রাবেয়া খাতুন নামের এক শিক্ষার্থী দুদকে অভিযোগ করেন। বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। 

এছাড়া, শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেয়ার নামে বিনা রশিদে জনপ্রতি ১৪০ টাকা হারে আদায় করা হয়। পাঠদানের বিষয় নবায়ন, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা আত্মাসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।  

নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070710182189941