বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী জগদীশ সারস্বাত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল শাখার এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগে ৩০ বছর ধরে চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসাইন মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বরিশাল সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে ওই সহকারী শিক্ষকের সরকারি ও অভ্যন্তরীণ বেতন-ভাতা বন্ধসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছেন।
জগদীশ সারস্বাত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই সহকারী শিক্ষকের নাম মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি স্কুল শাখায় যোগদান করেন ১৯৯০ সালের ১ জুলাই।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগে ১৯৮৯ সালের ৭ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ১৯৯০ সালের ১৯ জুন ইংরেজি বিষয়ে ক্ষিরোদ লাল কর এবং গণিত বিষয়ে বিজয়কৃষ্ণ ঘোষ নিয়োগ পান। একই তারিখে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনকে।
বিজ্ঞপ্তিতে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে দু'জন শিক্ষক নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হলেও বেআইনিভাবে তখন কৃষি বিভাগের শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত জগদীশ সারস্বাত গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুল শাখায় কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ে পাঠদানের অনুমোদন নেই। বিদ্যালয়ে যে বিষয়ে পাঠদানের অনুমোদন নেই সে বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বৈধ হতে পারে না বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ভুয়া তথ্য দিয়ে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন সরকারি ও বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ খাত থেকে বেতন-ভাতা বাবদ লাখ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, যে বিষয়ে পাঠদান হয় না, সে বিষয়ের শিক্ষকেরও প্রয়োজন নেই। অধিদপ্তরের চিঠি এখনও পাইনি। পেলে নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের দাবি, বৈধ প্রক্রিয়ায় তার নিয়োগ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন।