শিক্ষক থেকে যেভাবে আইএস প্রধান হলেন বাগদাদি | বিবিধ নিউজ

শিক্ষক থেকে যেভাবে আইএস প্রধান হলেন বাগদাদি

রবিবার ইসলামিক স্টেট (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তরপশ্চিম সিরিয়াতে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে বাগদাদি নিহত হয়েছেন বলে জানান ট্রাম্প। এদিকে উত্থানপর্বের চিত্র উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। নিচে তা তুলে ধরা হলো--

রবিবার ইসলামিক স্টেট (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উত্তরপশ্চিম সিরিয়াতে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে বাগদাদি নিহত হয়েছেন বলে জানান ট্রাম্প। এদিকে উত্থানপর্বের চিত্র উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। নিচে তা তুলে ধরা হলো--

আবু বকর আল বাগদাদি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া থেকে ফুটবল চর্চা সবকিছুতে আগ্রহী ছিলেন। ক্লাব ফুটবলে রীতিমতো স্টার হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু দুনিয়া তাকে চিনেছে অন্যভাবে। মসজিদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোনের সামনে আইএস প্রধান বাগদাদিকে বক্তৃতা দিতে দেখার ছবিই দুনিয়ার কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। রবিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন। কে এই বাগদাবি? কী তার অতীত?

বাগদাদির  জন্ম হয়েছিল ইরাকের ছোট্ট শহর সামারায় একটি সুন্নি পরিবারে। যদিও ওই সময় বাগদাদির নাম ছিল ইব্রাহিম আল বদরি। ছোটবেলা থেকেই কোরান ও ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি অসম্ভব টান ছিল তার। তা নিয়েই পড়াশোনা শুরু করে বাগদাদি। ১৯৯৬ সালে বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজের ওপর ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর কোরানিক স্টাডিজে মাস্টার ডিগ্রি ও পরে ডক্টরেটও পান বাগদাদি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো তথ‌্য থেকে অবশ্য বাগদাদি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মেলেনি।

জানা গেছে, ওই সময়েই বাগদাদ শহরের কাছে একটি মসজিদে শিশুদের কোরান শিক্ষা দিতে শুরু করেন তিনি। সেইসঙ্গে চলতে থাকে তার ফুটবল চর্চাও। ক্লাব ফুটবলে রীতিমতো স্টার হয়ে উঠেছিলেন বাগদাদি। ২০১৩ সালে নিজেকে 'খলিফা' হিসেবে ঘোষণা করার পরই আইএস প্রধান হিসাবে উঠে আসে তার নাম। তবে ৪২ বছরে বাগদাদির কথা তেমনভাবে শোনা যায়নি। বরং, তা মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতেই সীমাবদ্ধ ছিল।

পরিবারের ধর্মীয় পরিবেশ জোরালো প্রভাব ফেলেছিল বাগদাদির ওপর। ইরাকে মুসলিম ব্রাদারহুড আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন বাগদাদির কাকা।  তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়েই মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগ দেন বাগদাদি। তবে, শুধুমাত্র সেই গণ্ডিতেই আটকে থাকেন নি তিনি। ২০০০ সাল নাগাদ সালাফি জিহাদিদের সঙ্গে যোগ দেন বাগদাদি। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র বলছে, ৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ সালের মধ্যেই আফগানিস্তানে জিহাদি প্রশিক্ষণ নেয় বাগদাদি। 

নব্বইয়ের দশকে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ছাত্র ছিলেন বাগদাদি। ২০০৩ সালে মার্কিন বাহিনী যখন ফের ইরাকে অভিযান শুরু করে তখন বাগদাদি অবশ্য পুরোপুরি জঙ্গি। ২০০৪ সালে তাকে প্রথম এবং শেষবারের জন্য গ্রেপ্তার করেছিল মার্কিন বাহিনী। পাঠানো হয়েছিল বুক্কা ক্যাম্পে, সেখানে ১০ মাস কাটান বাগদাদি। তখন বেশিরভাগ সময়ই ধর্মীয় চর্চা করতেন বাগদাদি।

সেই সঙ্গে বিভিন্ন বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির নেতাদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ঘটে। বুক্কা ক্যাম্প থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ইরাকের আল কায়দা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বাগদাদি। যদিও, পরে ওই জঙ্গি সংগঠন ভেঙে দিয়ে তার নাম রাখা হয় আইএস। বিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে এক জায়গায় আনার ক্ষমতা, ধর্মীয় পড়াশোনা-সমস্ত কিছু বাগদাদিকে নেতা হিসাবে উঠে আসতে সাহায্য করেছিল।