শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হবে কবে? - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হবে কবে?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বর্তমানে বাংলাদেশে ৪২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে শিক্ষক নিয়োগের মতো বিষয়গুলোয় রীতিমতো ঘটছে মোটা অঙ্কের লেনদেন আর জনসমক্ষে আসছে গুটিকয়েক।

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো; যেখানে শিক্ষক নিয়োগ হওয়া উচিত মেধার ভিত্তিতে। কিন্তু বাস্তবিকতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখন যেন ‘টাকা যার, শিক্ষকতা তার।’ অর্থের বিনিময়ে পেশা বেচাকেনার বড় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন। বুধবার (১৭ জুলাই) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধনটি লিখেছেন মো. মাইদুল ইসলাম।

এরকম বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের নামে জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর ভদ্র অসাধু শিক্ষক। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এতগুলো টাকা দিয়ে কোনো শিক্ষক যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পায়, তখন তিনি তার প্রকৃত দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে ভুলে অর্থের পেছনে ছুটতে থাকেন।

যেখানে তার শিক্ষার্থীবান্ধব হয়ে উঠার কথা ছিল; সেখানে তিনি হয়ে উঠছেন অর্থবান্ধব। এভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এখন আর গবেষণা, বিশ্লেষণমূলক শিক্ষা ও ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন না। ভাবেন, কীভাবে রাতারাতি গাড়ি-বাড়ি বানিয়ে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন অতিবাহিত করা যায়।

উচ্চশিক্ষার এ স্তরে শিক্ষকদের জবাবদিহিতা না থাকায় শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে উদাসীন থাকেন। একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে, শিক্ষকরা ক্লাসে এসে নোট অথবা বই দেখিয়ে ক্লাস শেষ করে দেন, বছরে দু-চারটি ক্লাস নিলেও ছাত্রছাত্রীদের কিছুই করার থাকে না।

ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ, সুবিধা নিচ্ছে বিশ্ববিদ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনের কতিপয় ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি। মূলত এ কারণেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে জায়গা করে নিতে পারেনি।

এখন আসা যাক, এ স্তরের রাজনীতি নিয়ে। দলীয়করণে পৃথিবীর আর কোথাও এরকম একটাও নজির নেই, যেখানে দলের বড় নেতাদের ছত্রছায়ায় সব কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।

আমাদের দেশে শিক্ষক রাজনীতির সর্বোচ্চ অবনতি ঘটেছে, যেখানে একটু ক্ষমতার জন্য যে কাউকে আমরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র কিংবা আঘাত করতেও পিছপা হচ্ছি না।

দেশে নাপিতের ঘরে যে পরিমাণ অস্ত্র পাওয়া যায়, আমাদের শিক্ষকদের কাছে সে পরিমাণ বই পাওয়া যায় না। এর একটাই কারণ হতে পারে আর তা হল, অর্থভিত্তিক মানসিকতা।

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আশায় উচ্চমহলের দরবারে কিছু সুপারিশ-

১. দলীয়করণ বন্ধ করে শিক্ষকদের গবেষণায় যুক্ত হওয়া উচিত।

২. বাজেটে গবেষণায় বেশি অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে, যাতে শিক্ষকদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।

৩. রাজনৈতিক ক্ষমতা হ্রাস করে উপযুক্ত প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে, যাতে তারা নিজেকে ‘ফারাও’ (আমি যা করব, তাই) ভাবতে না পারে।

৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদ দিয়ে পিএসসির অধীনে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. অর্থ কিংবা ক্ষমতা নয়, মেধাশক্তির প্রাধান্য বহাল রাখতে হবে।

উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মাননীয় শিক্ষকদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে মেধাভিত্তিক সমাজ কাঠামো গড়ার পাশাপাশি শিক্ষা বাণিজ্য দূর করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।

শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে - dainik shiksha শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি - dainik shiksha বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা - dainik shiksha শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে - dainik shiksha ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে - dainik shiksha নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে - dainik shiksha ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা - dainik shiksha জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0080859661102295