হাতীবান্ধার ধুবনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বদলি করতে এক ছাত্রীকে জড়িয়ে কথিত ‘যৌন নিপীড়নের’ অভিযোগ তুলেছিল স্কুলের পরিচালনা কমিটি। কিন্তু যে ছাত্রীকে জড়িয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছিল এখন সেই ছাত্রীর পরিবার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করে জড়িতদের বিচার দাবি করছেন। এটিকে মিথ্যা অপবাদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ছাত্রীটির বাবা। তিনি বলেন, ‘এমন মিথ্যা অপবাদের কারণে যদি আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে! তাহলে এর দায় কে নেবে?’
নানা কারণে প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ শিপুর সঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ শিপুর বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ‘যৌন নিপীড়নের’ অভিযোগ তোলে পরিচালনা কমিটি। জরুরি মিটিং ডেকে রেজুলেশনও করে পরিচালনা কমিটি।
‘যৌন নিপীড়নের’ দায়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন স্কুল কমিটির সভাপতি মোশারফ হোসেন। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে চরম বিপাকে পড়েন ছাত্রীটির বাবা। এ ঘটনাকে মিথ্যা অপবাদ আখ্যা দিয়ে তিনি তার মেয়ে ও পরিবারের মানহানি করা হয়েছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ছাত্রীটির বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্কুলের পরিচালনা কমিটি আমার মেয়েকে জড়িয়ে যে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে তাতে আমার পরিবারের মান-সম্মান নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছি। বিচার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছি। তবে এ অবস্থায় যদি আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে, তাহলে আমি আদালতে যাব।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ শিপু বলেন, ‘স্কুলের উন্নয়ন কাজ নিয়মানুযায়ী করতে গেলে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আমার মতবিরোধ দেখা দেয়। আর সে কারণে এত বড় জঘন্য অপবাদ দেয়া হয়।’
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউপি মেম্বার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘যৌন হয়রানির ঘটনাটি শুনে রেজুলেশন করে শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দিয়েছি মাত্র। কিন্তু ছাত্রীর বাবা যদি ‘অস্বীকার’ করেন তাহলে তো আমাদের কিছু করার নেই।’
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোলেমান মিয়া শুক্রবার মোবাইল ফোনে জানান, স্কুলের পরিচালনা কমিটির লিখিত অভিযোগের পর ছাত্রীর বাবার আরেকটি অভিযোগ পেয়েছি। এতে ওই ঘটনাকে মিথ্যা অপবাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।