শিক্ষক বদলিতে টাকার খেলা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক বদলিতে টাকার খেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির আবেদন নেয়া হয়েছে অনলাইনে। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী মহল এই অনলাইন বদলিকে কেন্দ্র করেও ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির হীন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে সরিয়ে অনলাইনে আবেদন নেয়া হলেও টাকা লেনদেনের মচ্ছব বন্ধ করা যায়নি। অভিযোগ আছে, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক নেতারা বদলিরও জন্য সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করেও টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।   

এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষকদের সতর্ক করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের দায়িত্বশীলরা বলছেন, বদলিতে কোনো শিক্ষককে বিশেষ সুবিধা দেয়ার সুযোগ নেই। তাই, কোনো শিক্ষক যেনো বদলির জন্য কারো সঙ্গে আর্থিক লেনদেন না করেন।

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলিতে টাকা লেনদেনের অভিযোগ ছিলো। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকার অনলাইনে শিক্ষকদের বদলি করার প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু শিক্ষক নেতারা সাধারণ শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে, কোন কোন শিক্ষক নেতা এ অপচেষ্টা চালাচ্ছেন জানতে চাইলে সাধারণ শিক্ষকরা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আমাদের নেই। 

আরও পড়ুন : ঘুষের টাকাসহ শিক্ষা অফিসের কর্মচারী দুদকের হাতে ধরা

বদলিতে শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আগের কমিটির কয়েকজন নেতা সাধারণ শিক্ষকদের বদলির নানা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারাও টাকা নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারাও মাঠের পরিচিত ও প্রভাবশালী শিক্ষকদের ব্যবহার করছেন। শিক্ষকদের কারো কারো তথ্য অগ্রায়ন করা হচ্ছে। কারো কারো তথ্য অগ্রায়ন করা হচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, অধিদপ্তরের কোনও কোনও কর্মকর্তাও বদলির জন্য টাকা লেনদেনের চেষ্টা করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। কোনো কোনো কর্মকর্তা কোনও কোনও শিক্ষককে বিশেষ সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ আছে। এমনকি আমাদের ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করেও টাকা চাওয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষকরা কিছুটা হতাশার মধ্যে আছেন। 

ওই শিক্ষক নেতা আরও বলেন, এবার বদলি হচ্ছে অনলাইনে। আগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বদলির জন্য কোনও কোনও শিক্ষককে বিশেষ সুবিধা দেয়ার সুযোগ থাকলেও এবার সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে বদলি প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে কাউকে টাকা দিলে কোনো বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে না। আমি শিক্ষকদের অনুরোধ করবো, কারো প্রলোভনে বিভ্রান্ত না হতে। আর কর্মকর্তারা কারো আবেদন অগ্রায়ন না করে থাকলে সেটি মনিটরিং করতে হবে অধিদপ্তরকে। মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তারা যদি সময়মতো কাজ না করেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। অধিদপ্তর যদি আবেদন অগ্রায়ন না করা কর্মকর্তাদের উপজেলার তথ্যগুলো যাচাই করেন তাহলে বোঝা যাবে কেনো তারা আবেদন অগ্রায়ন করছেন না। কোনো শিক্ষক ভুলভাবে আবেদন করলে তার আবেদন অগ্রায়ন করা হবে না স্বাভাবিক। কিন্তু সঠিকভাবে করা কারও আবেদন যেনো টাকা না দেয়ায় বাতিল করে না দেয়া হয়। এজন্য মনিটরিং জোরদার করতে হবে। 

এদিকে গতকাল রোববার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকদের বদলির জন্য কারো সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে সতর্ক করা হয়েছে। অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন শাখার পরিচালক মনীষ চাকমা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে অনলাইনে একই উপজেলার মধ্যে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম চালু হয়েছে। শিক্ষকদের আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া গত ৬ অক্টোবর শেষ হয়েছে। বর্তমানে তথ্য হালনাগাদ করাসহ কারিগরি উন্নয়নের জন্য শিক্ষক বদলি সফটওয়্যারের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে- যা পরবর্তীতে চালু হবে। অনলাইন বদলি কার্যক্রম পুরোপুরি সফটওয়্যার নির্ভর। এ কার্যক্রমে ব্যক্তিগতভাবে কাউকে কোনোভাবে বিশেষ সুবিধা দেয়া বা বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত না থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করা হলো।

উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ - dainik shiksha স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ ও ‘বিশ্ব বই দিবস’ শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে - dainik shiksha শিক্ষার মান পতনে ডক্টরেট লেখা বন্ধ জার্মান পাসপোর্টে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0072429180145264