শিক্ষাঙ্গনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাঙ্গনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

কবি সুনির্মল বসুর একটি কবিতা আছে- 'বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র,/ নানান ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবারাত্র।'

বিশ্বজোড়া প্রতিষ্ঠিত এই হরেক রকম শিক্ষাঙ্গনের মধ্যে আমাদের প্রিয় প্রাতিষ্ঠানিক পাঠশালায় শৈশব-কৈশোরে আমরা যখন কচি মন নিয়ে শিক্ষা পেতে প্রবেশ করি, তখন এক পবিত্র স্বপ্নময় আলোর ছোঁয়ায় হৃদয় স্পর্শ করে। শিক্ষার্থীদের মতো শিক্ষকদেরও স্বপ্ন থাকে ছাত্রছাত্রীদের মানুষ হিসেবে গঠন করার, সমাজ থেকে সম্মান ও ভালোবাসা পাওয়ার। অভিভাবকরা স্বপ্ন দেখেন সন্তান সুশিক্ষিত হয়ে অনেক বড় হবে। শনিবার (৩ আগস্ট) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধনটি লিখেছেন  ড. প্রতিভা রানী কর্মকার।

এই স্বপ্নময় আলোর যাত্রায় নানা কিছু শেখার মাঝে শিক্ষার্থীদের, শিক্ষকদের ও অভিভাবকদের মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব কতটুকু, সেটাই এই লেখার আলোচ্য বিষয়। এখানে শিক্ষাঙ্গনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বলতে শুধু মনের আনন্দ বা হর্ষবর্ধন বোঝাচ্ছে না, বরং পাঠদানের পাশাপাশি সৃজনশীলতার বিকাশ, মানুষকে মানুষ হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া, ভালো মানুষ হওয়ার শিক্ষা, সহমর্মিতা, সাহসিকতা, সততা, শৃঙ্খলাবোধ, দেশপ্রেমের মর্মার্থ, মহানুভবতার সুফল ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞানদান করাও বোঝায়। আমরা জানি, এ পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ আলাদা, তাদের শারীরিক ও মানসিক চাহিদাও হয়তো আলাদা। কিন্তু একটা জায়গায় আমাদের সবার মিল রয়েছে- সেটি হলো, আমরা সবাই ভালোবাসা পেতে ভালোবাসি। অবহেলায় আমাদের মনে মেঘ জমে এবং ভালোবাসায় তা বাষ্প হয়ে ওড়ে যায়।

যেমন ধরুন, কোনো অভিভাবক যদি সন্তানের পরীক্ষার ফলাফলে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেয়ে ওই শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে সরাসরি দায়ী করেন বা কেন তার সন্তানের ফল এমন হলো, এ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হন ওই শিক্ষক ও তার ছাত্রছাত্রীর সামনেই, তাহলে সম্মানিত শিক্ষক পাঠদানে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়তে পারেন এবং সেই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের শ্রদ্ধাবোধের জায়গায় আঘাত না লাগলেও আঁচড় লাগতে পারে। আবার অন্যদিকে এমনটা যদি হয়, ওই শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানের কেউ এহেন পরিস্থিতিতে বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কোনো অভিভাবককে অপ্রিয় ভাষায় দোষারোপ করে কথা বলেন, সে ক্ষেত্রেও প্রিয় বাবা-মাকে ক্লাসের বন্ধুদের সামনে বা সবার সামনে অপমানিত হতে দেখে শিশু-কিশোরদের ভেতর হতাশা জাগতে পারে। এই হতাশা বা খারাপ লাগার পরিণতি কখনও কখনও ভয়াবহও হতে পারে। তাই সম্মান ও শ্রদ্ধা পারস্পরিক হওয়া ভালো।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে রয়েছে আজীবনের সম্মান, শ্রদ্ধা আর অকৃত্রিম ভালোবাসার বন্ধন। সেই বন্ধন যেন কোনো স্বার্থের পরশ হালকা না করতে পারে, এ বিষয়টি উভয়েরই ভাবতে হবে। নিয়মিত শিক্ষকদের পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমে অংশগ্রহণ, সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং তাতে অংশগ্রহণ, শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সুমিষ্ট অনুপ্রেরণামূলক কথোপকথন, শিক্ষাঙ্গনের প্রতি ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা থাকা ইত্যাদিও শিক্ষাঙ্গনে মানসিক স্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা বিধানে দরকার হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, ছাত্রছাত্রীরা যে জায়গায় তাদের জীবনের উল্লেখযোগ্য সময়টি পার করছে, সেটি যেন শুধু ভয়ের না হয়। শুধু কিছু তাত্ত্বিক বিষয় শেখার জায়গা বা সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জায়গা না হয়। বরং সেখান থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা ও স্মৃতি যেন সারাজীবন রোদ্দুরে বা ঝড়ে সব কষ্ট ভুলে আনন্দের স্মৃতিসুখে ভাসিয়ে দেয় শিক্ষার্থীদের মন, শিক্ষকদের দেওয়া অনুপ্রেরণায় তারা সামনে এগিয়ে যায় সর্বক্ষণ।

পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031869411468506