শিক্ষাঙ্গনে সুবাতাস কাম্য - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাঙ্গনে সুবাতাস কাম্য

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিক্ষাঙ্গনে চাই সুবাতাস। সেখানে পেশী শক্তি কিংবা অস্ত্রের ঝনঝনানি অনাকাক্সিক্ষত। পেছনের দিকে তাকালে আমরা কী দেখি? আশি ও নব্বই দশকে শিক্ষাঙ্গন প্রায়শই অশান্ত হয়ে উঠত। এর নেপথ্যে ছিল প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রাধান্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। অন্তত আগের মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই। পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য শিক্ষা সরঞ্জামের অভয়ারণ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের ঝনঝনানি তেমন শোনা যায় না। যদিও মাঝেমধ্যেই অপ্রত্যাশিতভাবে অশান্ত হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গন।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মধ্যেই অসন্তোষ বিরাজ করে। চলে নানামুখী আন্দোলন। এসব কারণে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে থাকে শিক্ষার্থীদেরই। তাদের বিদ্যার্জন ব্যাহত হয়। নতুন অনুমোদিত জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদাহানি ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে এমন দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের কথা আমরা প্রসঙ্গত স্মরণ করতে পারি। তাতে শিক্ষার্থীদের বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল। শিক্ষকদের সঙ্গে অন্যান্য পেশাজীবীর মূল পার্থক্য হচ্ছে শিক্ষকরা জাতির ভবিষ্যত নাগরিকদের তৈরি করেন। তাদের দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা, সহিষ্ণুতা ও শিষ্টাচার সকলের অনুসরণীয় হওয়ার মতো। আমরা শিক্ষকদের বিবেচনাবোধের ওপর ভরসা রাখি। শিক্ষার্থীদের ওপর তাদের সুপ্রভাব পড়ুকÑ এটাই অভিভাবকদের চাওয়া।

তবে এটাও বাস্তবতা যে ক্যাম্পাস রাজনীতিতে শিক্ষক রাজনীতির স্খলন নেতিবাচক পরিবেশের সৃষ্টি করে। গত প্রায় তিন দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক রাজনীতির চরিত্র ছাত্ররাজনীতিরই প্রতিচ্ছবি যেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী দলের শিক্ষক নেতারা পাঠদানের চাইতে দলীয় অন্যান্য কাজে যেন বেশি সময় দেন। অনেকেরই শিক্ষাদান ও গবেষণা এখন গৌণ হয়ে পড়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাজের প্রত্যাশা থাকে তারা শিক্ষাঙ্গনের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন। ছাত্রদের শ্রেণীকক্ষ ও পাঠ গ্রহণের নানা সমস্যা থেকে শুরু করে আবাসিক সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানে ব্রতী হবেন। তারা এমন কিছু করবেন না যাতে শিক্ষাঙ্গনে ভীতির সঞ্চার হয় এবং সাধারণ অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ ছাত্র সংগঠনের এক বহিষ্কৃত কর্মীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি না দেয়ায় ক্যাম্পাসে রীতিমতো তা-ব চালিয়েছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তারা পুলিশের সঙ্গেও অহেতুক বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ছাত্র সংগঠনটির ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ঘটে নানাভাবে।

এর ফলস্বরূপ সেখানে ট্রেন চলাচলেও বিঘœ সৃষ্টি হয়। এটা দুঃখজনক। শিক্ষাঙ্গনের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণে ক্যাম্পাসের বাইরের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হওয়া অবশ্যই নিন্দনীয়। আমরা মনে করি, শিক্ষাঙ্গনের সুবাতাস নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ছাত্র সংগঠনসমূহের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। সেই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালিত হলে তাদেরই সুনাম হয়। পক্ষান্তরে তাদের কারণে পরিবেশ বিঘিœত হলে, পাঠদান প্রক্রিয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে তাতে তাদেরই ক্ষতি। আমরা আশা করব ছাত্র সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই দেশের সকল শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ সর্বাঙ্গীণ সুন্দর ও স্বস্তিকর রাখার জন্য দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। শিক্ষাঙ্গনে মেঘ কেটে যাক, বিদ্যার আলোয় চারদিক ঝলমল করে উঠুক।

সৌজন্যে: জনকণ্ঠ

স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ - dainik shiksha ঢাকাসহ ১৩ জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের মৌখিক পরীক্ষা শুরু ৯ মে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ হাইকোর্টের প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নতুন নির্দেশনা টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত - dainik shiksha টেম্পু চাপায় কলেজছাত্রী নিহত কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00341796875