শিক্ষাভবনে কর্মসূচি নেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে! - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাভবনে কর্মসূচি নেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালনের কোনো কর্মসূচি নেই রাজধানীর আবদুল গণি রোডে শিক্ষা ভবনে অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে। দিবসটি উপলক্ষে ইস্কাটনে অবস্থিত মাদ্রাসা অধিদপ্তরেও নেই কোনো কর্মসূচি। শুধু তাই নয় এ প্রতিষ্ঠান দুটির প্রধান প্রধান কোনো কর্তাব্যক্তিকে আজ ১৭ মার্চ ধামন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতেও দেখা যায়নি। অথচ এই প্রতিষ্ঠান দুটি সারাদেশের প্রায় ৩৫ হাজার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের নির্দেশ দিয়েছে।

১৭ মার্চ খা খা করছে শিক্ষা ভবন

সেনা শাসক জেনারেল এরশাদ জমানার এক শিক্ষাঘাতী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষা অধিদপ্তরের মূল প্রশাসনিক পদসমূহের শতকরা ৯০ ভাগে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষকরা পদায়ন পেয়ে আসছেন। বাকী দশ ভাগে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি হাইস্কুল শিক্ষকরা পদায়ন পেয়ে আসছেন। এছাড়া শিক্ষা ভবনে অবস্থিত শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন কয়েকডজন শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত রয়েছেন শতাধিক শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। এই ভবনেই অবস্থিত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরেও ছিল না কোনো কর্মসূচি।  মূল ফটকে একটি মাত্র ব্যানারে জন্মদিনের শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে জাতিরজনককে।
দৈনিকশিক্ষাকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের কিউরেটর ও সাবেক শিক্ষাসচিব মো: নজরুল ইসলাম খান শনিবার বলেন, দিবস ও বার্ষিকীর পার্থক্য বোঝেন এমন কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। আত্মায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করা কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে পদায়ন করতে হবে।
শিক্ষা ভবনে কেন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের উদযাপনের কোনো কর্মসূচি নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে শনিবার (১৭ মার্চ) শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক মো: মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা শিক্ষাবোর্ডেও জাতীয় দিবসসমূহ পালন করা হতো না, আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে তা চালু করেছি। শিক্ষা অধিদপ্তরেও বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনসহ অন্যান্য জাতীয় দিবস উদযাপন করা শুরু করবো।’
সিঙ্গাপুর সফর শেষে শুক্রবার রাতে তিনি ঢাকায় ফিরেছেন বলে জানান।
জানা যায়, শিক্ষা অধিদপ্তরের মূল পদগুলোর অধিকাংশতেই বছরের পর বছর যাবত কর্মরত বিএনপি ও জামাতপন্থী কর্মকর্তারা। তারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পত্র-পত্রিকা দ্বারা প্রভাবিত। এই ঘরানার পত্রিকায় পাঠ করতে দেখা যায় অধিকাংশ কর্মকর্তাকে।
অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক আবদুল মালেক জামাতপন্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি নায়েমে চাকুরিকালে তারঁ সম্পাদিত একটি প্রকাশনায় জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রশিক্ষণ শাখায় পদায়ন পেয়ে তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে শিক্ষা ক্যাডারের জামাত-বিএনপিন্থীদের ডেকে আনছেন। নিয়োগ পেয়েই আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়া সফর করেছেন শিক্ষা প্রকল্পের জন্য লোন করা টাকায়। 

মনিটরিং ও ইভ্যালূয়েশন শাখার সেলিম মিয়া শিক্ষাজীবনে এরশাদের ছাত্র সংগঠনের নেতা ছিলেন বলে জানা যায়। এই শাখার উপ-পরিচালক কামাল হায়দার ও মাহবুবা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়।
মাধ্যমিক শাখার পরিচালক পদে তিনবছরের বেশি সময় ছিলেন অধ্যাপক মো এলিয়াছ। জামাতপন্থী কর্মকর্তাদের দিয়ে এমপিওভুক্তিতে ইচ্ছাকৃত ভুল করিয়ে সারাদেশে সরকারের জন্য দুর্নাম কামিয়েছেন। গত বছর তাকে হবিগঞ্জের সরকারি বৃন্দাবন কলেজে বদলি করা হলেও উপ-পরিচালক মো: মোস্তফা কামাল এখনও শিক্ষা অধিদপ্তরেই রয়েছেন। বদলি হওয়া কর্মকর্তা এলিয়াছের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শিক্ষা অধিদপ্তরের বড় বড় কর্মকর্তারা।
টাকার বিনিময়ে আইনি মতামত দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত অধিদপ্তরের আইন শাখায় রয়েছেন আল আমীন সরকার। শিবিরপন্থী হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার। মাধ্যমিক কর্মকর্তা আফসার উদ্দিনের বিরুদ্ধেও রয়েছে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ। টাকার বিনিময়ে এমপিওভুক্ত করার অভিযোগ রয়েছে আফসার উদ্দিনের বিরুদ্ধে। কুষ্টিয়া ইসলামী ইউনির্ভাসিটির সাবেক শিবির নেতা ও ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার এমপিও দালাল সামিউল ইসলামকে আফসারের কক্ষে দেখা যায় বিকেল পাঁচটার পরে।
শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে  কোয়ালিটি শাখার উপ-পরিচালক খোরশেদ ও ফিন্যান্স ও প্রকিউরমেন্ট শাখার ফারাহানার বিরুদ্ধে। রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগও। সেই খোরশেদকেই বৃহস্পতিবার দেয়া হয়েছে  কলেজ শাখার উপ-পরিচালকের (এমপিও) দায়িত্বও।
গত ১৪ মার্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালনের নির্দেশনায়ও রয়েছে জন্মদিন ও জন্মবার্ষিকীর বিভ্রান্তি। আজ ১৭ মার্চ জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও ৯৮তম জন্মবার্ষিকী। কিন্তু এই দিবসটি উদযাপন করতে স্কুল-কলেজ পাঠানো ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেয়া নির্দেশনায় কাটাকুটি করে লেখা হয়েছে ৯৮তম জন্মদিবস লেখা হয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে রয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারভুক্ত জামাতপন্থী একজন যুগ্ম-সচিব। উপ-পরিচালক পদে রয়েছেন সাবকে ছাত্রদলে দুর্ধর্ষ ক্যাডার ও বর্তমানে শিক্ষা ক্যাডার ড. ছরোয়ার আলম। টাকার বিনিময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার অভিযোগে তাকে তদন্ত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগ।

এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036520957946777