পটুয়াখালীর বাউফলে ইউনিক আইডির জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস) প্রকল্পের সরকার প্রণীত সিটিজেন কোর ডেটা স্ট্রাকচারে (সিসিডিএস) শিক্ষার্থীর তথ্য পূরণ ও অনলাইনে ডেটা এন্ট্রির নামে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ২২০ টাকা হারে নিয়েছেন উপজেলার বড়ডালিমা দাখিল মাদরাসার কয়েকজন শিক্ষক।
নানা হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থী প্রোফাইল ও ডেটাবেজ প্রণয়নে মাদরাসার সুপারসহ কয়েকজন শিক্ষক মিলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২২০ টাকা হারে আদায় করছেন। ইতোমধ্যে মাদ্রাসার দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর অধিকাংশের কাছ থেকে তথ্য ফরম ফটোকপি বাবদ ১০টাকা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে ১০০টাকা, অনলাইনে এন্ট্রিতে ১০০টাকা ও অন্যান্য খবরচ হিসেবে আরও ১০ টাকা দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে এই টাকা।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রিক্সাচালক আবুল বশার হাওলাদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘করোনায় দুই বেলা ভাত জোগাইতে কষ্ট অয়। স্কুল-মাদরাসা বন্ধ অওনে পোলাপানে পড়াল্যাহাও ভুইল্লা গ্যাছে। এ্যারমধ্যে জন্মনিবন্ধন, আইডি কাডের ফটোকপি আর ছবি নিজেরা কইরগ্যা দিছি। হ্যারপর রক্ত পরীক্ষা, ফরমের ফটোকপি আর কমপুটারে দেওনের লইগ্যা হুজুরেরা চাপ দিয়া ২২০ টাহা লইয়া গ্যাছে। ভাইপুতের মাইয়া সিক্সে পড়ে। হ্যার থাইক্কাও ২২০ টাহা নিছে।’
জুয়েল মৃধা নামে ওই মাদরাসার এক শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের বাউফল গিয়ে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতেতো অনেক খরচ আছে। ফরমের খসড়ার জন্য ফটোকপি করা লাগে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে দুই দিনের ইউনিক আইডি প্রশিক্ষণ নেওয়া ওই মাদরাসার সুপার আব্দুস সালাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষক খরচ হিসেবে কিছু টাকা নেওয়ার কথা আমার সঙ্গে বলছিল। তবে আদায়ের ব্যাপারে আমি ভাল জানি না। শুক্রবার বন্ধের দিন। শনিবার মাদরাসায় গিয়ে সব বলতে পারবো।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ আগস্ট থেকে ৬ দিনব্যাপি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা শিক্ষকদের ইউনিক আইডি প্রশিক্ষক কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থী প্রোফাইল ও ডেটাবেজ প্রণয়নে শিক্ষার্থী তথ্যফরম (হার্ডকপি) পূরণে মোট ১৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ কিছু সংখ্যক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস) প্রকল্পের আওতায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের আয়োজনে পৌর সদরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিজিটাল শিক্ষা ভবনে চলে এই প্রশিক্ষণ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, ‘সরকার কর্তৃক প্রণীত সিটিজেন কোর ডেটা স্ট্রাকচার (সিসিডিএস) অনুসরণে শিক্ষার্থীর মৌলিক ও অধ্যায়ন সম্পর্কিত তথ্য কাগজে কলমে পূরণ ও পরবর্তিতে অনলাইনে ডেটা এন্ট্রি করতে কোন ধরনের টাকা-পয়সা নেওয়ার বিধান নেই। কোন প্রতিষ্ঠান টাকা পয়সা আদায়ের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’