শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা কমেছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের (বিএসএএফ) তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১০ জন শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। চলতি বছর ৯ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৮৯। ফোরামের তথ্য মতে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতনে আহত হওয়ার ঘটনা কমেছে ৫৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।
বিষয়টি সার্বিক অর্থেই ইতিবাচক। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর এই শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা কিভাবে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায় সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। শিশু অধিকার সুরক্ষায় যথেষ্ট আইন থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ মানুষই জানে না, শিশুদের ওপর নির্যাতন করা হলে শাস্তির বিধান রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক শাস্তিকে অভিভাবক-শিক্ষক সবাই সাধারণ ঘটনা হিসেবেই ধরে নেন।
শিশুদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তির বড় ক্ষেত্র একশ্রেণির অভিভাবকই সৃষ্টি করেন। শিক্ষক যখন শিশুকে শারীরিক নির্যাতন করেন, তখন তারা ‘বাহবা’ দেন। এ পরিস্থিতির পরিবর্তন জরুরি। এখনও অনেক শিক্ষক মনে করেন তারা শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তুলতে পারেন। শিশু মনোবিজ্ঞান সম্পর্কে শিক্ষকদের ধারণা এখনও অনেক কম। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। প্রয়োজনে শিশু নির্যাতন বন্ধে সুস্পষ্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে।
শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিক্ষক-অভিভাবকদের বৈঠক, কাউন্সিলিং ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। এটা ঠিক যে, বাংলাদেশে বিদ্যমান শিশু নীতিমালার মধ্যে সব বিষয়ই স্পষ্ট করে বলা আছে। শুধু সমন্বয়ের অভাবে এর কার্যকারিতা দৃশ্যমান হচ্ছে না।
এ মুহূর্তে শিশুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে সমন্বয় বাড়ানো জরুরি। শিশুর ওপর যে কোন ধরনের নির্যাতন বন্ধে সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। স্কুলে শিশু নির্যাতন বন্ধে আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছেন তা যেন শতভাগ মেনে চলা হয় সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।