প্রত্যেক পিতামাতা সন্তানের ভালো চান। সন্তানের প্রতিভা বিকাশ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবারের ভূমিকাই প্রধান।
সন্তানের সফলতা অর্জনের জন্য পিতামাতা সব সময় নিরাপদ ও আনন্দময় শিক্ষার পরিবেশ খোঁজেন। একটি সুন্দর পরিবেশেই শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে। শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় থাকলে তবেই শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকে। দুঃখজনক হল, অভিভাবকরা সন্তানের পেছনে প্রচুর অর্থ খরচ করলেও শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন ঠিকমতো হচ্ছে না। অবাধে চলছে কোচিং বাণিজ্য।
এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেক শিক্ষক কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় ক্লাস ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে বিপথগামী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঠিকমতো ক্লাস না হওয়ায় ক্লাস ফাঁকি দেয়ার সুযোগ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরাও। তাছাড়া স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোনের অপব্যবহার করে নানা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। নেশাদ্রব্য নিয়ে রাস্তার আনাচে-কানাচে আড্ডা দিচ্ছে। একত্রে বসে ধূমপান করছে। ওরা ইন্টারনেটে বিকৃত ছবি, ভিডিও, ফেসবুক ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ঠিকমতো ক্লাস করে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অনাগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
শিক্ষার্থীদের ক্লাস ফাঁকির প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় আগের মতো শাসন নেই। দেখা গেছে, স্কুল পালানো শিক্ষার্থীদের অনেকে প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। বয়ঃসন্ধিকালের আবেগ রোধ করতে না পেরে অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। বস্তুত বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পড়ালেখায় তাদের মনোযোগ নেই। চরিত্র গড়ার আগেই নষ্ট হচ্ছে তাদের চরিত্র।
আমরা জানি, পিতামাতা সন্তানের ব্যাপারে উদাসীন হলে সন্তানরা সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সন্তান একবার নষ্ট হলে তাকে আর ভালো করা যায় না। নৈতিক শিক্ষা নীতিবোধ জাগ্রত করে। নৈতিক ও মানবিক গুণাবলী অর্জনের শিক্ষা কম হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক নিয়মে চললে এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ দিলে তাদের ক্লাস ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা কমে আসবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
শ্রীপুর, গাজীপুর
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর