সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় মাধ্যমিকে মানা হচ্ছে না ভর্তির নীতিমালা। করোনা সংক্রমণের সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকার পরও অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ দ্বিগুণ ফি আদায় করা হচ্ছে। আর্থিক দূরবস্থাসহ নানা কারণে মাধ্যমিকের প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিভাবকসহ উপজেলার বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপকালে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার সত্যতা স্বীকার করে আহমদ ইকবাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র দাস, পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ, শমশেরনগর এ এ টি এম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মিহির ধরসহ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, প্রতি বছরই কিছু ঝরে পড়ে। এ বছর ভর্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরো হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কিছুদিন আগে শিক্ষার্থীদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছিল তাতে গড়ে ১০ শতাংশ হারে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করেনি। এই হারে কিংবা কিছুটা কমবেশি পরিমাণ শিক্ষার্থী নানা কারণে ঝরে পড়বে। তারা আরো বলেন, ঝরে পড়া রোধে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করার জন্য আমরা নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শমশেরনগরের অভিভাবক নুরুল মুত্তাকিম ও পতনউষার এলাকার অভিভাবক আবদুল খালিক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেভাবে টাকা চাচ্ছে আমরা দিচ্ছি। আমরাতো কম দিতে পারি না। এখন আয় রোজগার কম, বাচ্চাদের পড়ালেখা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। চা-শ্রমিক দেওরাজ রবি দাশ বলেন, আয় রোজগার কম থাকায় আর্থিক সমস্যায় স্কুলে দিতে পারছি না। তাই কর্মস্থলে চলে যাচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের ১৮ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি ছাড়া অন্যকোনো ফি আদায় করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, বিদ্যালয়সমূহে নানা খরচ রয়েছে সেজন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিসমূহের সিদ্ধান্তে ভর্তি ফি আদায় করা হচ্ছে। তবে বাড়তি ফি আদায় বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, অতিরিক্ত ফি না নেওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের বলে দিয়েছি। তাছাড়া ভর্তির সময়ে নির্ধারিত ফির বাইরে কোনো খাতে টাকা নেওয়া হলে পৃথক রশিদ দিয়ে ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে টাকা নিতে হবে। অন্যথায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।