দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, গবেষণার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক মূল্যবোধের মানদণ্ডের প্রশ্নে তাদের অবস্থান যেমন জানা যাবে, তেমনই তাদের কাছ থেকেও উদ্ভাবনীমূলক অনেক ধারণা পাওয়া যাবে। টপ-ডাউন অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে গতানুগতিক কাজ সম্পন্ন হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বটোম-আপ অ্যাপ্রোচে অনেক উদ্ভাবনীমূলক কাজ করা যায়। কমিশন প্রত্যাশা করে, কমিশনের সকল গবেষণা কার্যক্রম হবে নির্মোহ এবং পক্ষপাতহীন।
সোমবার (৫ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ‘ইভালুয়েটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং দি অপারেশনাল পারফরম্যান্স অব ইন্টিগ্রিটি ইউনিটস আন্ডার দ্য ফ্রেমওয়ার্ক অব দ্য সিপিসিস’ শীর্ষক গবেষণার অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের ওপর মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক দেশের প্রতিটি মহানগর, জেলা, উপজেলা, এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে ৩ হ্জার ৭১৫টি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এবং ২৫ হাজার ৩৭১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা সংঘ গঠন করলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নৈতিক মূল্যবোধকে আরো শাণিত করার ইপ্সিত লক্ষ্যে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারেনি। এ কারণেই কমিশন এ জাতীয় গবেষণা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, গবেষণার নির্যাস হতে হবে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনাপূর্ণ, যাতে কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। সততা সংঘের সদস্য কিংবা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা নিজেরাও নিজ নিজ জীবনে সততা ও নৈতিকতার চর্চা করেন কি না, গবেষণায় তা স্পষ্টভাবে থাকতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের অবশ্যই দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এবং সততা সংঘের সদস্যরা সম্মিলতভাবে সক্রিয় হয়ে নিজ প্রণোদনায় কাজ করলে তারা স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে সামাজিক ওয়াচডগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, সমন্বিত জেলা কার্যালয়সমূহ এবং সততা সংঘের সদস্যদের কাজের ঐকতান থাকতে হবে। সমন্বিত উদ্যোগ ব্যতীত দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন সম্ভব নয়।
এ সময় দুদকের কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুর্নীতি যে ভয়ঙ্কর অপরাধ, এ বিষয়ে মানুষকে সংবেদনশীল করে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলেই দুর্নীতি প্রতিরোধ সহজ হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য কিংবা সততা সংঘের সদস্যদের ব্যক্তিজীবনেও সততার দৃষ্টান্ত রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ এবং প্রধান গবেষক শাহজাবীন কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহাপরিচালক (মানিল্ডারিং) মো. আতিকুর রহমান খান, মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) খান মো. নূরুল আমিন, পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।