আবাসন সঙ্কটে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

আবাসন সঙ্কটে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি |

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীর তুলনায় হল সংখ্যা কম হওয়ায় আবাসন সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খরচের বাইরেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বল্প আসনের হলগুলোতেও রয়েছে নানান সমস্যা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত প্রায় ৭৪০০ শিক্ষার্থীর ৮০ শতাংশই আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

গত তিন বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নতুন বিভাগ খোলা হলেও সেই তুলনায় বাড়েনি আবাসনব্যবস্থা। আবাসন সংকটের কারণে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে নোয়াখালী শহরে মেসে থাকেন। এই আবাসন সংকট কাজে লাগিয়ে শহরে চলছে মেস ও ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া দেওয়ার রমরমা ব্যবসা। এসব মেসে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। সাথে প্রতিনিয়ত লোডশেডিং, বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট তো আছেই। তা ছাড়া, নোয়াখালী শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসার পথে সোনাপুর নামক জায়গায় থাকে যানজট। এই যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আফসোস শেষ বর্ষে ওঠার পরেও হলে একটি সিট পাইনি। আবাসন সঙ্কট থাকায় বাধ্য হয়ে আমাকে থাকতে হচ্ছে মেসে। নোয়াখালী শহরে মেস ভাড়া অনেক বেশি। আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পক্ষে মাসিক ১৪০০-১৫০০ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকাটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া আরো খরচ তো আছেই।

মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসে। আমি না হয় কোনোভাবে খরচ চালাতে পারছি। আমার অনেক ছোটভাই আছে যারা খেয়ে না খেয়ে জীবন পার করছে। নোয়াখালীতে টিউশনিও সচরাচর পাওয়া যায় না। হলে থাকতে পারলে অনেকটাই হাফ ছেড়ে বাঁচতাম। খরচ কিছুটা কম হতো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের দুঃখ না বোঝে তাহলে আর কিছু বলার নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নোয়াখালী শহরের অধিকাংশ মেসে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এবার ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পৌর শহরের টক্কর এলাকার একটি ছাত্র মেস থেকে ফোন, ল্যাপটপ, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস চুরি হয়েছে যেখানে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা থাকত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রীরা শহরে মেসে থাকায় প্রায়ই বখাটেদের ইভটিজিং এর শিকার হতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার একযুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে স্বল্প আসনের মাত্র ৩টি হল। এর মধ্যে ২টি ছাত্রী ও ১টি ছাত্র হল। এই তিন হলে যেন সমস্যার শেষ নেই। হলের অনেক রুমে গাদাগাদি করে ডাবলিং করে থাকতে হচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের। হলগুলোতে খাবারের সমস্যা খুব বেশি। খাবারের ওপর নেই কোনো ভর্তুকিও।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ উদ্বোধন করেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হল। উদ্বোধনের পর ৫ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আজও চালু হয়নি ওই ছাত্রী হলটির কার্যক্রম। হলের কার্যক্রম দ্রুত চালু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। এদিকে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের পর চার বার নতুন করে সময় বাড়ানো হলেও আজও শেষ হয়নি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নির্মাণকাজ। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, নতুন দুটি হল দুটি চালু হলে ওই হলগুলোতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হল এবং হযরত বিবি খাদিজা হলের আবাসিক ছাত্রীরা শিফট হবে এবং ছাত্রীরা যে হলগুলোতে বর্তমানে আছে সেগুলো ছাত্রদের দিয়ে দেওয়া হবে।

আবাসন সংকটের কথা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর মমিনুল হক বলেন, কিছু সমস্যার কারণে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারছি না। ঠিকাদাররা ঠিকমতো কাজ শেষ করে না। নানা অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখে। আরো কিছু সমস্যা আছে। নতুন দুটি হল কবে চালু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটি এ মাসেই চালু হবে । জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলটির কাজ শেষ হতে আরো কিছুদিন দেরি হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিদার-উল আলম  বলেন, আমি নিয়োগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটসহ আরো বেশকিছু সমস্যা আমার চোখে পড়ে। আমি শিগগিরই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। নতুন দুটি হল চালু হলে আবাসন সংকট কিছুটা কমবে বলে আশা করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035820007324219