শিক্ষককে যেতে হবে শিক্ষার্থীর বাড়ি - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষককে যেতে হবে শিক্ষার্থীর বাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এক বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনা অতিমারির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের বাসায় গিয়ে বাড়ির কাজ দিতে হবে শিক্ষকদেরকে। বাড়ির পড়াও বুঝিয়ে দিতে হবে। আর আদায় করতে হবে বাড়ির কাজ। এমনই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে। আর জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন এনসিটিবি ও নেপের কর্মকর্তারা।

যদিও শিক্ষকদের মাঝে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলছেন, শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে কাজ দেয়া ও পড়া আদায় করতে হলে শিক্ষকদের হয়রানির মুখে পড়তে হবে। আর করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করা হয়ে যাবে ‘অসম্ভব’।   

সরকারের এ পরিকল্পনার কথা নিশ্চিত করে এনসিটিবির সদস্য ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, করোনা মহামারিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংসদ টিভি ও রেডিওতে শিক্ষার্থীদের চলমান পাঠদানের সাথে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখাটা যাতে মহামারিকালেও চলমান থাকে তা নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা জানি প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইগুলোতে একটি বা দুটি অধ্যয় পরপরই কিছু কাজ দেয়া থাকে। এ কাজগুলো শিক্ষার্থীদের বাড়িতে করতে দেয়া হবে।  শিক্ষার্থীদের যে ক্লাস্টার এবং সাব-ক্লাস্টার আছে, সে অনুযায়ী প্রতিটি ক্লাস্টারের মধ্যে শিক্ষকরা তাদের ক্যাচমেন্ট এরিয়া ভাগ করে নিতে পারেন। অথবা প্রতিটি শ্রেণির শিক্ষকরা শিক্ষার্থী সংখ্যা ভাগ করে এ কাজ করতে পারেন।

তিনি বলেন, এ কাজগুলো ওয়ার্কশিট আকারে শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে এ ওয়ার্কশিটের কাজ বুঝিয়ে দেবেন। শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ দেবেন। আবার সে কাজ বুঝে নেবেন। শিক্ষার্থীরা যদি কাজ বুঝতে না পারে সে বিষয়েও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সহযোগিতা করবেন। মূলত বাড়িতে বসে থাকা শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও সংসদ টিভি বা রোডিওতে চলমান পাঠদানের সাথে সমন্বয় সৃষ্টি করাই এ সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করছে এনসিটিবি ও নেপ। গত ২১ এপ্রিলও এ বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল সভা হয়েছে। আমরা কর্মপরিকল্পনাটি প্রস্তুত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে দেবো। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। সিদ্ধান্তের বিষয়টি শিক্ষকদের জানিয়ে আদেশও জারি করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। 

জানতে চাইলে নেপের মহাপরিচালক মো. শাহ্ আলম বৃহস্পতিবার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে এনসিটিবির সাথে আমরা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি। কর্মপরিকল্পনাটি তৈরি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে পাঠানো হবে। প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে শিক্ষকদের বাড়ির কাজ দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে এনসিটিবির সাথে নেপের কর্মকর্তাদের কয়েকদফা আলোচনা হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কর্মপরিকল্পনাটি চূড়ান্ত হবে। 

শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাড়িরকাজ দেয়ার এ বিষয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষকরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহীনূর আল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলছেন, এভাবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাড়ির কাজ দেয়াটা শিক্ষকদের জন্য কষ্টকর হবে। অনেক শিক্ষার্থীর বাড়িতে হয়তো শিক্ষকদের ঢুকতে দেয়া হবে না। আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অসম্ভব হয়ে যাবে।  

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হচ্ছিল। শিক্ষার্থীদের স্কুলে এসে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যেতে হয়। যদিও চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম স্থাগিত আছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোন নম্বর দেয়া হয়না। তবে, শিক্ষার্থীদের শাব্দিকমূল্যায়ন করা হয়। 

বিষয়টি উল্লেখ করে এ শিক্ষক নেতা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, এভাবেও যদি বলা হতো সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যেত। তবে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাড়িরকাজ দেয়ার দায়িত্ব শিক্ষকদের দেয়া ঠিক হবে না।    

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041837692260742