শিক্ষার্থী দুই, ১৬ লাখ তুলেই যাচ্ছেন চার শিক্ষক | মাদরাসা নিউজ

শিক্ষার্থী দুই, ১৬ লাখ তুলেই যাচ্ছেন চার শিক্ষক

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসা। আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ২ জন। আগের শিক্ষাবর্ষেও ২ জনই ছিলেন শিক্ষার্থী। তার আগের শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থীই ছিলেন না। তার আগে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও পাস করেননি কেউই। এভাবেই দীর্ঘ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসা। আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ২ জন। আগের শিক্ষাবর্ষেও ২ জনই ছিলেন শিক্ষার্থী। তার আগের শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থীই ছিলেন না। তার আগে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও পাস করেননি কেউই। এভাবেই দীর্ঘ এক যুগ ধরে চলছে জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগ। তবে ওই বিভাগের চারজন শিক্ষক প্রতি মাসে ১ লাখ ৩১ হাজার ২৭১ টাকা বেতন ভাতা তুলে যাচ্ছেন। চারজন মিলে বছরে তুলছেন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২ টাকা। 

সম্প্রতি নূর আলম নামে একজন অভিভাবক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক, জেলা অফিস ও মাদ্রাসা অধিদপ্তরে। তবে তার অভিযোগের কোনো ফল আজ তক মেলেনি। আগের মতোই বেতন তুলে যাচ্ছেন পদার্থ বিজ্ঞানের ভবেন্দ্রনাথ, রসায়নের জবেদ আলী, জীববিজ্ঞানের ফাতেমা খাতুন ও গণিতের সুপ্রভাত কুমার পাল।

অভিযোগে নূর আলম জানান, ১৯৯৫, ২০১৮ ও ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো বিভাগে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না থাকলে শিক্ষাবোর্ড থেকে সেই বিভাগের একাডেমিক স্বীকৃতি নবায়ন করা হবে না। ওই অবস্থা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে পাঠদানের অনুমতিও বন্ধ করে দেয়া হবে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অথচ জালঝারা ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না। সব নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা রীতিমতো মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকে একাডেমিক স্বীকৃতির নবায়নও বাগিয়ে নিচ্ছেন। প্রতি শিক্ষাবর্ষে মাত্র ২ জন শিক্ষার্থীকে পড়াতে সরকারকে ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২ টাকা গুণতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগ সঠিক। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বিজ্ঞান বিভাগে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই। দুএকজন শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে। আগের অধ্যক্ষ ওই চারজন শিক্ষককে লিখিতভাবে নোটিশও করেছেন। আগামী ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তারা কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী যোগাড়ের চেষ্টা করবেন বলে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। সেই শর্তে তাদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড তো আর বিজ্ঞান শাখার একাডেমিক স্বীকৃতি স্থগিত করেনি। সেজন্য আমরাও বেতন-ভাতা বন্ধ করতে পারি না। 

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আব্দুল গণি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ডের কাছে সব তথ্য আছে। তারা বেতন-ভাতা বন্ধ করার নির্দেশনা দিলে দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার একে গোলাম আযম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ধরনের একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। মণিরামপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মাদ্রাসা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডকে লিখিতভাবে জানাতে পারবো।