শিক্ষার এনজিওর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার এনজিওর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ

কক্সবাজার প্রতিনিধি |

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) প্রোগ্রাম ফর হেল্পলেস অ্যান্ড লেগড সোসাইটিসের (পালস) বিরুদ্ধে প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

প্রকল্পটিতে নিয়োগ করা শিক্ষক এবং স্থানীয়দের অভিযোগ, পেকুয়া উপজেলায় কাগজে-কলমে প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে সরকারি ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এনজিও পালস। জেলায় কর্মরত উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ এবং স্থানীয় প্রশাসনের তদারকির অভাবে এনজিওটি এসব দুর্নীতির সুযোগ পেয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৫ থেকে ৪৫ বয়সী নিরক্ষরদের মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের আওতায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সারা দেশে শতাধিক উপজেলায় ৬ মাস মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর  পেকুয়া উপজেলায় শুরু হয়ে চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ হয়। এনজিও পালস পেকুয়া উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিল।

দায়িত্ব পাওয়ার পর এনজিও পালস পেকুয়া উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে কাগজে-কলমে ৩০০ শিখন কেন্দ্র স্থাপন করে এবং নিয়োগ করে ৬০০ শিক্ষক ও ১৫ জন সুপারভাইজার। শিক্ষকদের মাসিক সম্মানী ২ হাজার ৪০০ টাকা, আর সুপারভাইজারদের ২ হাজার ৫০০ টাকা। ৩০০ শিখন কেন্দ্রের মধ্যে ১৫০টি শিখন কেন্দ্র ভাড়া নেওয়া হয়েছে বলে দেখানো হয় কাগজে-কলমে। এসব শিখন কেন্দ্রের ভাড়া প্রতিটি ৫০০ টাকা। প্রতিটি কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ব্যয় মাসিক ১৫০ টাকা। প্রতিটি শিখন কেন্দ্রের মাসিক জ্বালানি খরচ দেখানো হয় ৫০০ টাকা। শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, গত জুন মাসে ৬ মাস মেয়াদি ওই প্রকল্প শেষ হলেও এনজিও পালস পেকুয়ায় ৩০০ কেন্দ্রের ৬০০ শিক্ষকের অধিকাংশ শিক্ষককে মাসিক সম্মানীর টাকা পরিশোধ করেনি। গত মার্চে শিক্ষকদের জনপ্রতি ৭ হাজার ২০০ টাকা করে বিতরণ করলেও সেখান থেকে আবার বিভিন্ন ইউনিয়নের সুপারভাইজার শিক্ষকদের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেন।

এনজিও পালস ইতিমধ্যেই প্রকল্পটির ঢাকার প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে পেকুয়া উপজেলায় কাগজে-কলমে বাস্তবায়ন দেখিয়ে বিভিন্ন বিল ভাউচার দাখিল করে তিন মাসের শিখন কেন্দ্রের ঘর ভাড়া, জ্বালানি ব্যয় ও কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা বিলের বরাদ্দ উত্তোলন করে নিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। একইভাবে পালস চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসের বিলও তোলার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলেও জানা গেছে।

একাধিক শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫০টি কেন্দ্র ভাড়া হিসেবে দেখানো হলেও কোনো কেন্দ্রের মালিককে ভাড়ার টাকা দেওয়া হয়নি। জ্বালানি বাবদ প্রতিটি কেন্দ্রে মাসে ৫০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এনজিও পালস কোনো শিখন কেন্দ্রে জ্বালানি বিলের টাকা দেয়নি। কোনো কেন্দ্রেই ব্যবস্থাপনা বিল দেওয়া হয়নি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ। বরাদ্দের সিংহভাগ লুটপাট হয়েছে বলে দাবি তাদের।

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এনজিও পালসের পেকুয়া উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম অফিসার আবদুল হামিদ বলেন, পালস কোনো ধরনের দুর্নীতি করেনি। শিক্ষকদের বেতন ভাতাও যথাসময়ে পরিশোধ করা হয়েছে। তবে কিছু ইউনিয়নে সমস্যা হয়েছে।  

পেকুয়ায় এনজিও কর্তৃক অনিয়ম-দুর্নীতির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর কক্সবাজার জেলার সহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ জানান, অনিয়মের বিষয়টি তিনি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037729740142822