শিক্ষা কর্মকর্তাকে জুতার মালা পড়ানো সেই ৪ শিক্ষকের কারাদণ্ড - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা কর্মকর্তাকে জুতার মালা পড়ানো সেই ৪ শিক্ষকের কারাদণ্ড

পিরোজপুর প্রতিনিধি |

শিক্ষা কর্মকর্তাকে জুতার মালা পড়ানোর মামলায় কাউখালীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষককে কারাদণ্ড দিয়েছেন পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বুধবার (১৩ নভেম্বর) পিরোজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মেহেদী হাসান এ রায় দেন। 

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কাউখালী উপজেলার ১ নং সয়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. উজ্জ্বল মিয়াকে ১ বছর ৬ মাস এবং ৩৫ নং কেশরতা সুজাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাদল হালদার, ১৪নং মধ্য সোনাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্যামল হালদার ও ৩৭নং শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল খানসহ প্রত্যেককে ৬ মাস করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

এর আগে একই অভিযোগে সয়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. উজ্জ্বল মিয়াকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই অভিযোগে বাকি তিনজনের মধ্যে বাদল হালদার ও শ্যামল হালদারকে  চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আব্দুল জলিল খান চাকরির ৫৯ বছর পূর্তি হওয়ায় বেতন ভাতা না পেয়েই অবসরে আছেন।

জানা যায়, শিক্ষক উজ্জ্বল মিয়ার নেতৃত্বে অপর ৩ জন শিক্ষক ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কক্ষে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের গলায় জোরপূর্বক  জুতার মালা পড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তারা নিজেরাই আবার এ ঘটনা নিজেদের ক্যামেরাম্যান দিয়ে ভিডিও করিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সরবরাহ করে। বিভাগীয় তদন্তে ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে এই চার শিক্ষকের বিরুদ্ধেই পৃথক পৃথক বিভাগীয় মামলা রুজুসহ তাদেরকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বিভাগীয় মামলার তদন্তে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেককেই চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় । আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন তাদেরকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। উজ্জ্বল মিয়ার পক্ষ থেকে উক্ত নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করা হয়। উজ্জল মিঞার মামলা আদালত খারিজ করে দেয়ায় বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি করে উজ্জ্বল মিয়াকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বাকী তিন শিক্ষকের বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি প্রক্রিয়াধীন থাকে। এর মধ্যে শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল খান চাকরির ৫৯ বছর পূর্তি হওয়ায় বেতন ভাতা না পেয়েই অবসরে যান। 

একই অভিযোগে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে পিরোজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন । বাদিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন তালুকদার স্বপন ও অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি, ব্যক্তি জীবনে কোন অসৎ ও অন্যায় কাজ আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। একথা আমার সকল কর্মক্ষেত্রে সবাই জানে। ওই সকল স্বার্থাণ্বেষী শিক্ষকরা আমার কাছ থেকে অবৈধ কোনো সুবিধা নিতে না পারায় যে অপকর্ম করেছে তার শাস্তি আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। বিলম্বে হলেও বিজ্ঞ আদালতের এ রায়ে আমি সন্তুষ্ট। এ রায় সমাজের সকলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

বাদিপক্ষের এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন তালুকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আইন অনুসারে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই সরকারি কর্মচারী বিধায় সকলেই চাকরিচ্যুত হবেন।

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032711029052734