শিক্ষা কর্মকর্তারা ব্যস্ত উপকরণ ব্যবসায়! - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা কর্মকর্তারা ব্যস্ত উপকরণ ব্যবসায়!

রংপুর প্রতিনিধি |

শিক্ষকরা স্কুলে আসেন আর যান, ঠিকমত পড়ান না শিক্ষার্থীদেরকে । গল্পগুজব আর আরাম আয়েশ নিয়ে ব্যস্ত সহকারী শিক্ষকরা, প্রধান শিক্ষক আর টি.ও, এ.টি.ওরা উর্ধতন অফিসে বিভিন্ন তথ্য দেয়া এবং স্লিপ, রুটিন ম্যানটেন্ট, প্রাক-প্রাথমিক ও ক্ষুদ্র মেরামতসহ যেকোন বরাদ্দের টাকা দিয়ে কোন অফিসার কি কাজের কন্টাক নেবেন, কোন কাজে কত টাকা নিজে লাভ করবেন, কত টাকা প্রধান শিক্ষককে লাভ দিবেন এই নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

ব্যবসার সুযোগ দিয়ে স্কুলের পুরাতন ভবন, টয়লেট ও গাছ বিক্রি করছেন প্রধান শিক্ষকরা। লেখাপড়ার মান উন্নয়ন নিয়ে নেই কোন মাথা ব্যথা, প্রধান শিক্ষক আর এ.টি.ওদের মাথা ব্যথা হলো বরাদ্দের টাকা দিয়ে, কি উপকরন/স্টেশনারিকে সরবরাহ করবেন ।

ঘটনাটি ঘটেছে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলায়। পীরগাছায় কর্মরত সহকারী শিক্ষা অফিসাররা ব্যবসায়িক মানসিকতা নিয়ে এই উপজেলায় কর্মরত আছেন।

১৭৮টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিবছর যখন কোন অর্থ বরাদ্দ লাগে তখন অফিসাররা প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে মাসিক মিটিংয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে প্রাক্কলন অনুযায়ী বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ, রুম সজ্জিতকরণ কারিগর, অফিস ডেকোরেশনসহ বিল্ডিং এর গ্রীল, কলাপসিবল গেট, সততা স্টোরের খাতা পর্যন্ত সরবরাহ করেন। শুধু তাই নয় প্রধান শিক্ষক যে এস.এম,সিকে নিয়ে বিদ্যালয়ের রুম সজ্জিত করনসহ ইলেট্রিক্যাল কাজ করতেও এ.টি.ওদের পছন্দের নির্দিষ্ট লোকের মাধ্যমে করে নিতে হয় বলে অনেকেই অভিযোগ করেন । কোন শিক্ষক নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে কাজ করালে সেই কাজের বিভিন্নভাবে ত্রুটি খুজে বের করে বিল আটক করে হয়রানি করেন। আবার এই এ.টি.ওদের কাছে বেশি সুবিধাভোগী কিছু প্রধান শিক্ষক আছেন যারা সব সময় সাধারণ প্রধান শিক্ষকদের চাপে রেখে নিজেদের কেনাকাটা অফিসারদের নিকট থেকে করতে বাধ্য করান।

কেউ অফিসারদের নিকট স্কুলের শিক্ষা উপকরণ কিনতে রাজি না হলে ভিন্ন কৌশলে তাদের নামে কৈফিয়ত তলবসহ বেতন কর্তনের ঘটনাও ঘটেছে। এ.টি.ওদের নিকট থেকে কেনা কাটা না করায়, তিন-চারজন প্রধান শিক্ষককে দিয়ে গনেশের খামার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গ্রিল ডিজিটাল পাল্লা দিয়ে মেপে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে । অথচ ওই এ.টি.ও চর ছাওলা কামারের হাট ও কাশিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গ্রিল সরবরাহ করেছেন। কাশিমে প্রায় ২০০ কেজি গ্রিল কম দিয়ে ভাউচার পাঠিয়েছিলেন এ.টি.ও শামসুজ্জামান, পরবর্তীতে গ্রিল কম মনে হওয়ায় স্থানীয়রা পাল্লা দিয়ে মেপে নিলে কমের বিষয়টি প্রকাশ পায় এবং এ.টি.ও কম ওজনকে মেনে নেন । এ.টি.ও শামসুজ্জামান গ্রিল সরবরাহের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধে করেছি।

কিন্তু চর ছাওলা কামারের হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিরানী বলেন আমি একটু অসুস্থ হওয়ায় আমার এ.টি.ও স্যার আমার নিকট থেকে শুধু খরচের ভাউচার আর চেক সহি স্বাক্ষর করে নেন। যেকোন প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না ।

পীরগাছা মডেল, কুটিপাড়া, নেকমামুদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিদ্যালয়কে শিক্ষা উপকরণ, পরীক্ষার খাতার কভার পেজসহ যেকোন মালামাল রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করেন। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদেরকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে । কিন্তু পড়ালেখার মানোন্নয়নে নিয়ে নেই কোন বিশেষ পরিকল্পনা । অফিসার বিশেষ সুবিধার কারণে গাবুড়া ও পূর্ব শিবদেব চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশকিছু বিদ্যালয়ে নাম মাত্র কাজও চোখে পড়ে না । স্লিপ সংক্রান্ত পরিপত্রের অন্যতম একটি শর্ত ভঙ্গ করে এ.টি.ওরা গত অর্থ বছর স্লিপ থেকে ১০ হাজার টাকার করোনা কিট বক্স সরবরাহ করেছেন। যার বাজার মূল্য ছিল সর্বোচ্চ তিন-চার হাজার টাকা।

কর্মকর্তাদের এহেন কর্মকা-ের কারণে ছাওলা, বালাটারী, পীরগাছা মডেল ও দাদন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, টয়লেট ও অনেক বড় বড় গাছ বিক্রির মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে বিক্রি করে সমুদয় অর্থ আত্মসাত করেন।

এ ব্যপারে ছাওলার প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন মৌখিক অনুমতি সাপেক্ষে ভবন বিক্রি করে ওই জায়গায় ফুল বাগান বানিয়েছি । বর্তমানে ৮টি স্কুলের ১২ লক্ষ টাকার প্লেন এক্সেসরিজ সরবরাহ করতেছেন এ.টি.ও আফজাল হোসেন বলে নিশ্চিত করেন বরাদ্দ পাওয়া প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান । তিনি সকল প্রধান শিক্ষককে তার নিকট হতে নতুন করে মনিটরিং বোর্ড নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে বলেছেন।

এ ব্যাপারে এ.টি.ও আফজাল কিছু বিষয় এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমরা সহযোগিতা করছি । উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান এর সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস - dainik shiksha কাল খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শনিবারও চালু ক্লাস সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় - dainik shiksha ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে স্মার্টফোন নয় একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব - dainik shiksha একই স্কুলের দুই ছাত্রীকে বিয়ের পর আরেক ছাত্রীকে ল্যাব সহকারীর অনৈতিক প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.008552074432373