শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার ছেলের খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের রহস্য - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার ছেলের খাতা পুনঃনিরীক্ষার আবেদনের রহস্য

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

দৈনিকশিক্ষাডটকম,  চট্টগ্রাম:   বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের শিক্ষক ও  চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিবের ছেলের ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন নিয়ে বোর্ডে জোর আলোচনা চলছে। সচিব বা তার পরিবারের কেউ এমন আবেদন করেননি বলে দাবি করছেন। এমনকি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সচিবের স্ত্রী। একই সঙ্গে এ পুনঃনিরীক্ষণ আমলে না নেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন বলেও জানা গেছে। যদিও বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করেনি। বর্তমান সচিব একই বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে ছিলেন। 

অনেকের ধারণা সচিবের ছেলেকে বেশি নম্বর দেয়া হয়েছে, একটি পক্ষ তা জানে এবং বিষয়টি প্রমাণ করার জন্যই নিরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। কয়েকবছর আগে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের তোফার বিরুদ্ধে তার নিজ মেয়ের ফল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছিলো। কিন্তু বাড়ৈপন্থী হওয়ায় রক্ষা পায়। চট্টগ্রাম বোর্ডের সচিবের এই কেলেংকারিও হয়তো ধামাচাপা পড়ে যাবে। 

জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে বাংলা বিষয় ছাড়া সব বিষয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছেন। বাংলায় ‘এ’ পেলেও অতিরিক্ত বিষয়ের পয়েন্ট যুক্ত হওয়ায় সামগ্রিক ফলাফল জিপিএ ৫ হয়েছে। চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন বোর্ডের সচিবের ছেলে।

সোমবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেছেন বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ (নম্বর : ৩৩৫)। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বোর্ডের নিয়ম অনুসারে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে গেলে দেখা যায় যে, আমার ছেলের রোল নম্বরের বিপরীতে কে বা কারা আগেই ছয় বিষয়ের মোট ১২ পত্রের জন্য পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে রেখেছে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ১৩ পত্রের মধ্যে কয়েকটিতে সে আবেদনে আগ্রহী ছিল। বিষয়টি অতীব সন্দেহজনক এবং দুরভিসন্ধিমূলক। এতে কোনো কুচক্রী মহলের খারাপ পরিকল্পনার ইঙ্গিত রয়েছে, যা ভবিষ্যতে তার ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কা করছি।’

শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথ শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করেছেন। তার নামে যে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা হয়েছে, তা যাতে বিবেচনায় না আনা হয়। অর্থাৎ নিরীক্ষণ করার প্রয়োজন নেই। গত সোমবার এ আবেদন চেয়ারম্যানের দপ্তরে জমা হওয়ার পর তা গতকাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

কিন্তু এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার বলেন, ‘এ ধরনের কোনো আবেদন আমার কাছে আসেনি। আর সবাই আবেদন করবে টেলিটক মোবাইলের মাধ্যমে। যারা আবেদন করবে তাদের কোড নম্বর চলে আসবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সে অনুযায়ী তা নিরীক্ষণ করবেন।’

সচিবের ছেলের পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন অন্য কেউ করেছে কি না, জানতে চাইলে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরিবারের সদস্য ছাড়া একজনের আবেদন আরেকজন কেন করবে? তবে এ বিষয়টি আমার নলেজে আসেনি।’

শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, তাদের অনেকের ধারণা সচিবের ছেলে হয়তো ফলাফলের চেয়ে উত্তরপত্রে আরও কম নম্বর পেয়েছে। একটি পক্ষ তা জানে। আর জানে বলেই তারা নিরীক্ষণের আবেদন করেছে। নিরীক্ষণ করলে প্রকৃত বিষয়টি উদঘাটিত হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের মোবাইলে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা - dainik shiksha জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি - dainik shiksha মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার - dainik shiksha ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046451091766357