শিক্ষা প্রকৌশলে এ মাসেই ছাড় হবে ৯৫০ কোটি টাকা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা প্রকৌশলে এ মাসেই ছাড় হবে ৯৫০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চাঁদপুরের লোকজনের আনাগোণা বেড়েছে। হরিলুটের আয়োজন হয় প্রতিবছর জুন মাসে। আছে বিশাল সিন্ডিকেট।

এদিকে চলতি অর্থবছর শেষের পথে। কিন্তু গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের হার সন্তোষজনক নয়। চলতি অর্থবছরের মাত্র এক মাস বাকি থাকলেও বরাদ্দ টাকার একাংশ ফেরত যাওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে শেষ সময়ে এসে টাকা খরচের হিড়িক পড়েছে। এমনকি একাধিক দপ্তর কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারদের বিল পরিশোধের চেষ্টা করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে ৭৮টি প্রকল্প আছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) এসব প্রকল্পের অনুকূলে মোট ৮ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত এই বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়নের হার ৫৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে ১৫টি প্রকল্প আছে, তাদের বাস্তবায়নের হার ৬৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ১২টি প্রকল্পের বাস্তবায়নের হার ৪৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের অধীনে থাকা বেশিরভাগ প্রকল্পই সংকটে রয়েছে। নির্ধারিত মেয়াদে বাস্তবায়ন হয়নি অধিকাংশ প্রকল্প। এই ধীরগতির জন্য মন্ত্রণালয়, মাউশি কর্মকর্তা এবং প্রকল্প পরিচালকরা (পিডি) পরস্পরকে দায়ী করছেন। অনেক প্রকল্পেই দক্ষ পিডির অভাবে কাজ এগুচ্ছে না। আবার মাউশি অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সমন্বয়হীনতাকেও পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করছেন প্রকল্প পরিচালকরা।

সারা দেশের স্কুল-কলেজের অবকাঠামো নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি)। শুধুমাত্র চলতি জুন মাসেই তারা ৯৫০ কোটি টাকা বিল ছাড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে অনেক ভবনের কাজ শেষ না হলেও আগেভাগেই টাকা ছাড়ের চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি ঢাকা জোনের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী বদলি হয়েছেন রংপুর জোনে। তিনি রাজধানীর প্রায় ১০টি ভবনের কাজ শেষ না করেই পূর্ণ বিল পরিশোধ করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে। যেহেতু বিল পরিশোধ হয়ে গেছে, তাই ঠিকাদাররাও কাজ শেষ করতে গড়িমসি করছেন। এতে ঢাকা জোনের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী বিপাকে পড়েছেন।

চলতি মাসেই দেশের তিন হাজার স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে ইইডি ২৪৫ কোটি টাকা ছাড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রকল্পের পিডি হিসেবে রয়েছেন ইইডির প্রধান প্রকৌশলী। তবে প্রধান প্রকৌশলী পদে থেকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে থাকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

এছাড়া চলতি মাসে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পে ৯৭ কোটি, ভূমি জরিপে ২৭ কোটি, মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে ৩৮০ কোটি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৭ কোটি এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোর প্রকল্পে ২৫ কোটি টাকা ছাড়ের প্রস্তুতি চলছে। তবে কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলী বেশিরভাগ প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরেই ইইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন, যা নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে অন্য প্রকৌশলীদের মধ্যে।

‘ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩০ জুন। অথচ এপ্রিল পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের (৩২৩টি) উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ধীরগতিতে এগুচ্ছে। গত এপ্রিল নাগাদ এই প্রকল্পের অগ্রগতি ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ‘সরকারি কলেজসমূহের বিজ্ঞান শিক্ষার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পে এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ।

তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজসমূহের (১৫০০ কলেজে নতুন ভবন স্থাপন ও পুরনো ভবন সংস্কার) উন্নয়ন’ প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটির পিডি অধ্যাপক মো. আশফাকুস সালেহীন বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পে নতুন কিছু কলেজ যুক্ত হয়েছে। ফলে প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ছে। আমরা নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করতে পারব।’

‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজ’ (এনএএএনডি) প্রকল্পের বাস্তবায়ন দুর্নীতিতে আটকে গেছে। ৪২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ১৭ দশমিক ৫২ শতাংশ।

৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালে। অথচ গত এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৩৪ শতাংশ। ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রাম’ (সেসিপ) প্রকল্প শেষ হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর। ৩ হাজার ৮২৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পের অগ্রগতি ৮৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। ‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন’ (পর্যায়-২) প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি জুনে। নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে প্রকল্পটি থমকে আছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত এর অগ্রগতি মাত্র ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্পে’র অগ্রগতি গত এপ্রিল পর্যন্ত ৩৩ শতাংশ, মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্প (৬৪ জেলা) ১২ দশমিক ১১ শতাংশ, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি ১৪ শতাংশ, ৫০৯ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমপিউটার ও ল্যাংগুয়েজ ক্লাব স্থাপন প্রকল্পে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ, ‘বাংলাদেশ কভিড-১৯ স্কুল সেক্টর রেসপন্স’ প্রকল্পে ১২ শতাংশ এবং চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতি গত এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ।

শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে - dainik shiksha শিক্ষা কমিশনসহ আরো কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha শাবিপ্রবির উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে শপথ পড়ালেন শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি - dainik shiksha বায়তুল মোকাররমে দু‘পক্ষের সংর্ঘষ, আহত কয়েকজন মুসল্লি শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা - dainik shiksha শর্তসাপেক্ষে এমপিও পাবেন বিপিএড শিক্ষকরা ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে - dainik shiksha ঢাবিতে হ*ত্যার ঘটনায় ৬ ছাত্র আদালতে নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে - dainik shiksha নির্যাতনে তোফাজ্জলের শরীর থেকে মাংস খসে পড়ে ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে - dainik shiksha ১৩ চ্যালেঞ্জ শিক্ষাখাতের, অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১ হাজার ৮৮৭ শিক্ষক জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা - dainik shiksha জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যার ঘটনায় সমন্বয়কসহ ৮ শিক্ষার্থীর নামে মামলা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0073721408843994