শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তার বাবার নামে স্কুলের নামকরণের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তার বাবার নামে স্কুলের নামকরণের অভিযোগ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি |

গোপালগঞ্জে ভাষা শহীদদের নামে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নিজের পিতার নামে নামকরণের অভিযোগ ওঠেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এক উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে। গোপালগঞ্জ শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য ও সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ গোলজারের ছেলে মিফতার হোসেন চৌধুরী জেলা প্রশাসকের কাছে নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদ ও পূর্বের নাম বহাল রাখার দাবিতে একটি অভিযোগ করেছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবদুল্লাহ আল বাকী ২৭ নভেম্বর ৫ কর্মদিবসের মধ্যে গোপালগঞ্জের জেলা শিক্ষা অফিসারকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষা কর্মকর্তা খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান তদন্তের ব্যাপারে বলেন, বিদ্যালয়ের কাছে এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত চাওয়া হয়েছে। তারা তা এখনও না দেয়ার কারণে প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব হচ্ছে। তবে অবিলম্বে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। 

স্বাধীনতার প্রায় ৪৫ বছর পরে শহীদ স্মৃতি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে রুস্তম আলী চৌধুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে নামকরণ করায় এলাকায় জনমনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামে স্থানীয় জনগণ ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শহীদ স্মৃতি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা ভবনের তৎকালীন অডিট শাখার উপ-পরিচালক আজাদ হোসেন চৌধুরী তার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে তার পিতা রুস্তম আলী চৌধুরীর নামে নামকরণ করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ওই কর্মকর্তার পিতা রুস্তম আলী চৌধুরী ৯৫নং গোবরা মৌজার ৩০৩৬ (এসএ-২৪৮২) দাগের থেকে ১০০ শতাংশ জমি শহীদ স্মৃতি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের একটি বিশেষ সভা আহ্বানের মাধ্যমে এ নাম পরিবর্তনের রেজুলেশন করা হয়। এর আগে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি আরেকটি রেজুলেশনে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব করে।

অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে আসে, নাম পরির্তনের জন্য বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ের তহবিলে দশ লাখ টাকা জমা দেয়ার বিধান থাকলেও বর্তমানে ওই টাকা জমা নেই। এছাড়া আজাদ হোসেন চৌধুরী নিজে বিদ্যালয়ের স্থায়ী দাতা সদস্য হয়েছেন। বিধান অনুযায়ী, এজন্য বিদ্যালয়ের তহবিলে দুই লাখ টাকা জমা দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা না দিয়ে কিভাবে স্থায়ী দাতা সদস্য হয়েছেন সে বিষয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে।

অপরদিকে রুস্তম আলী চৌধুরীর দানকৃত জায়গায় বিদ্যালয়টি থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে বিদ্যালয়টির অবস্থান সরকারি খাস জমির ওপর। দানকৃত ওই ১০০ শতাংশ জমি বিদ্যালয় থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নদীতে রয়েছে। এ ব্যাপারে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী বলেন, ওই সময় কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছিল কিনা এ মূহূর্তে আমি তা মনে করতে পারছি না। অভিযোগকারী মিফতার হোসেন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় ভাষা শহীদ স্মৃতি নাম মুছে ফেলা ধৃষ্টতার শামিল। তিনি বিদ্যালয়টির পূর্বের পুনর্বহালের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক (অর্থ) আজাদ হোসেন চৌধুরী ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে বলেন, তিনি এখন একটি মিটিং এ আছেন। তবে বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054621696472168