যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব ড. মোল্লা আমীর হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দুটি মামলার নথি ও কম্পিউটারের হার্ডডিক্স গায়েবের অভিযোগ উঠেছে।
আর মামলা দুটি তার বিরুদ্ধেই দায়ের হয়েছিল। নথি গায়েবের ঘটনায় বোর্ডে তোলপাড় চলছে। বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, হাইস্পিড লেজার প্রিন্টার ও খাম ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ড. মোল্লা আমীর হোসেনের বিরুদ্ধে ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ১ ডিসেম্বর যশোর জেলা জজ আদালতে এবং ৮ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতে দুটি মামলা হয়। ওই মামলার দাফতরিক সব কাগজপত্র তার কাছেই সংরক্ষিত ছিল। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে অধ্যাপক পদে পদোন্নিত দেয়া হয়েছে। কিন্তু দুই মামলাসংক্রান্ত দাফতরিক নথিপত্র বুঝিয়ে না দিয়ে তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদানের জন্য বুধবার ছাড়পত্র নিতে যান। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ছাড়পত্র দিতে বাধা দেন। তাকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলীম সভা ডেকে পরিস্থিতি শান্ত করেন। ওই সভায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র, কলেজ পরির্দশন এম রব্বানী, স্কুল পরির্দশক ড. বিশ্বাস শাহীন আহমেদসহ সব দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভা চলাকালে মোল্লা আমীর হোসেন মামলাসংক্রান্ত নথিগুলোর ফটোকপি দেন। মূল কপি তার কাছে নেই বলে জানান। সভায় উপস্থিত সবাই মূল নথি চান, অন্যথায় অনাপত্তিপত্র দেয়ার পক্ষে মত দেন।
সভায় উপস্থিত সিবিএ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, মূল নথি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ছাড়পত্র দিতে আপত্তি জানানো হয়। আলোচনার এক পর্যায়ে তাকে মাউশিতে যোগদানের অনুমতিপত্র দেয়া হয়। একই সঙ্গে নথি উদ্ধারে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- আহ্বায়ক যশোর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু তোরাব মোহাম্মদ হাসান। অন্য দুই সদস্য হলেন- শিক্ষা বোর্ডের প্রধান মূল্যায়ন অফিসার মিজানুর রহমান ও উপ-বিদ্যালয় পরির্দশক সহকারী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব ড. মোল্লা আমীর হোসেন বলেন, সচিব কখনও নথিপত্র সংরক্ষণ করেন না। অতীতেও কোনো সচিব নথি সংরক্ষণ করেননি। এটা সংশ্লিষ্ট শাখা করে থাকে। বদলির সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অনাপত্তিপত্রও (এনওসি) দেয়া হয়নি।
বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, নথি গায়েবের অভিযোগ পাওয়ায় সচিবকে অনাপত্তিপত্র দেয়া হয়নি। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।