মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে কর্মচারীদের পদোন্নতিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিধি ভেঙে ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাধারণ কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। তারা বলছেন, মাত্র কয়েকজনকে পদোন্নতি দিতে সাধারণ কর্মচারীর বড় অংশকেই বঞ্চিত করা হচ্ছে। গত সপ্তাহেও কয়েকজনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আজকালের মধ্যে আবারো পদোন্নতির সভা বসবে। সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সাধারণ কর্মচারীরা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, পদোন্নতির জন্য সঠিক ও নির্ভুল জ্যেষ্ঠতার তালিকা প্রয়োজন ছিল, যা মাউশি অধিদপ্তরের চলমান পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি। মাউশির কর্মচারীরা জ্যেষ্ঠতার তালিকাভুক্ত হওয়ার যোগ্য। জ্যেষ্ঠতার তালিকার খসড়া প্রণয়ন করে নোটিশ বোর্ড অথবা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার বিধান রয়েছে। প্রকাশিত তালিকা সম্পর্কে কর্মচারীদের কারও কোনো অভিযোগ থাকলে ৩০ দিন সময় দিয়ে আপিল করারও বিধান আছে। কেউ আপিল করলে সব আপিল গ্রহণ করে একটি কমিটির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করার নিয়ম রয়েছে। অথচ মাউশির বর্তমান পদোন্নতির ক্ষেত্রে এসব বিধান মানা হয়নি। জ্যেষ্ঠতার খসড়া তালিকা সম্পর্কে যে কর্মচারীরা আপিল করেছেন তাদেরও শুনানির জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকা হয়নি। আপিলে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তাও তাদের জানানো হয়নি।
পদোন্নতির জন্য চূড়ান্ত করা জ্যেষ্ঠতার তালিকা বিধিসম্মত হয়নি বিধায় কর্মচারীরা নতুন করে জ্যেষ্ঠতার তালিকা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জারি করা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এসআরও নম্বর ৩০৪ নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালার তফসিল-১ এ 'প্রধান সহকারী' পদটি পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করার কথা বলা আছে। এ পদে পদোন্নতির জন্য ফিডার পদ উচ্চমান সহকারী পদে অনূ্যন ২ বছর অথবা সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে অনূ্যন ২ বছর চাকরি হতে হবে। উচ্চমান সহকারী ও সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর ছাড়া অন্য কোনো পদ থেকে প্রধান সহকারী পদে পদোন্নতির বিধান নেই। অথচ মাউশি কর্তৃপক্ষ প্রধান সহকারী পদে পদোন্নতির জন্য জ্যেষ্ঠতার তালিকায় মোট ৪টি পদকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পদগুলো হলো- প্রধান সহকারী (কলেজ), উচ্চমান সহকারী, হিসাবরক্ষক কাম ক্লার্ক এবং সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, যা বিধিবহির্ভূত।
সরকারি এসআরও অনুসারে, প্রধান সহকারী পদে ফিডার পদ দুটি। উচ্চমান সহকারী ও সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর। জ্যেষ্ঠতার ক্ষেত্রে এই দুই পদের কর্মচারীরাই জ্যেষ্ঠতা তালিকায় স্থান পাবেন এবং এই দুই পদের যোগদানের তারিখ থেকে অর্থাৎ ফিডার পদে যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করার বিধান। মাউশি এ বিধানও মানেনি।
অধিদপ্তরের একজন পরিচালক ও একজন উপপরিচালক এসব অনিয়মের জন্য দায়ী বলে জানা গেছে।