চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের দুই অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়েছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ছাত্রলীগের নেতারা। কলেজ প্রশাসনকে শিবির সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে উল্লেখ করে দুই অধ্যক্ষের মুঠোফোনের কললিস্ট যাচাই করারও দাবি জানান। তাঁরা বলেন, কললিস্ট যাচাই হলে শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ ও প্রশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী কামরুল হুদা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু মোহাম্মদ আরিফ ও কায়সার উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হামজা, চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা মাহমুদুল হাসান ও মো. মহিউদ্দিন, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা মায়মুন উদ্দীন এবং নগর ছাত্রলীগের নেত্রী ফারিয়া আকবর।
সংবাদ সম্মেলনে দুই কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ এবং জামায়াত-শিবিরকে প্রত্যক্ষভাবে মদদ দেওয়া শিক্ষকদের সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। এর মধ্যে রয়েছে কাল শনিবার চট্টগ্রাম কলেজের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও, রোববার মহসিন কলেজের প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও, সোমবার ক্যাম্পাসের বাইরের চারদিকে চারটি পথসভার আয়োজন এবং মঙ্গলবার ছাত্র সমাবেশ করা হবে। এ ছাড়া ইতিপূর্বে ঘোষিত আট দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনও চলবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, চট্টগ্রাম ও মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে আবাসিক ঘরবাড়ি, লন্ড্রি ব্যবসা ও মোবাইল ফোনের রিচার্জ ব্যবসা চালু করে ছাত্রশিবিরের সুপারিশে খণ্ডকালীন প্রহরী ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জঙ্গিদের আশ্রয় দেন বলে অভিযোগ করা হয়। ফলে দুটি কলেজ ক্যাম্পাস এলাকা উগ্র জঙ্গিবাদীদের আস্তানা হিসেবে গড়ে উঠেছে। এ কারণে তিন দশক ধরে কলেজ ক্যাম্পাসে মুক্তবুদ্ধির চর্চা হয়নি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ওপর ছিল অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, ‘কলেজের শিক্ষার্থী হয়ে আজ আমাদের শিক্ষকদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সবাইকে জানাতে হচ্ছে। এই দুটি কলেজের প্রশাসন শিবিরের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়ে আসছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দুটি কলেজ ক্যাম্পাসের পরিবেশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ নয়। ক্যাম্পাসকে নিরাপদ এবং শিক্ষার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আট দফা দাবি দেওয়া হয়। দাবি আদায়ে এক সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। অথচ মহসিন কলেজের এক শিক্ষক এক ছাত্রকে এ নিয়ে মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নেতারা।
গত ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে বিজয় দিবসের দিন ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে শিবির হামলা চালায়। এরপর দুটি কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেয় কলেজ প্রশাসন।