শিশুদের শুধু নিজ আকাঙ্ক্ষা চাপিয়ে দেবেন না - দৈনিকশিক্ষা

শিশুদের শুধু নিজ আকাঙ্ক্ষা চাপিয়ে দেবেন না

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

প্রশ্ন : কেউ একজন বলেছিলেন, যখন একজন শিশু জন্মায়, সে কোনো নির্দেশাবলী নিয়ে আসে না। ধরে নেয়া যাক কাউকে এরকম একটি নির্দেশাবলী লিখতে হবে যে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের কেমন হওয়া উচিত— তাহলে সেটা (সেই নির্দেশাবলী) কেমন হবে?

উত্তর : খালি বই হলে দারুণ হবে। এখন আপনি সবকিছুই যান্ত্রিক করে দিতে চাইছেন। আপনারা যেটাকে উপকারী বলে মনে করেন, সেভাবে নিজেকে কার্যকরী করা ছাড়াও একজন মানুষের অন্য কিছু মাত্রাও রয়েছে। একজন মানুষকে কারো জন্য উপকারী হতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। ব্যাপারটা এরকম যে, জোয়াল কাঁধে বলদ জঙ্গলে লাফিয়ে বেড়ানো বন্য হরিণ দেখে বলছে, ‘ইশ! কীভাবে ওরা নিজেদের জীবন নষ্ট করছে—কারো উপকারে লাগছে না। কোনো কাজের নয়।’ কিন্তু ঐ হরিণদের মধ্যে আত্মসন্তুষ্টি আছে। আপনার কাঁধে জোয়াল বাঁধা, আপনার কোনো খুশি নেই। রোববার (২৫ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

যদি আপনি কেবল উপকারী হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে এক অখুশি মানুষ হয়ে যান, তাহলে জীবনের সব উদ্দেশ্যেই ব্যর্থ হবে। আপনার কাজের কোনো মূল্যই থাকবে না। সামাজিকভাবে হয়তো কেউ আপনাকে পুরস্কৃত করবে আপনার ঐ শোচনীয় মুখখানি বয়ে বেড়ানোর জন্য, আর জগতে যে কাজ করেছেন তার জন্য, কিন্তু নিজের জীবনের ক্ষেত্রে আপনার কোনো দাম নেই।

সুতরাং অন্য কারোর বুদ্ধির মাধ্যমে জীবনকে দেখা বন্ধ করুন। আরও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আপনার জীবনকে দেখতে শিখুন। যদি অন্যান্য প্রভাবগুলো সরিয়ে নেয়া হয়, প্রত্যেকেরই প্রয়োজনীয় বুদ্ধিমত্তা রয়েছে নিজের জীবনটাকে বিচক্ষণতার সঙ্গে দেখার। সমস্যাটা হলো, অতীত ও বর্তমানের বিখ্যাত ব্যক্তিদের দ্বারা আপনারা ভীষণভাবে প্রভাবিত। যার ফলে আপনাদের মানসিকতা একটা ক্লাবের সদস্যদের মতো হয়ে গেছে। সদস্যদের বা সমর্থকদের ক্লাব—এটা একটা খুবই প্রাথমিক বা স্থূল মানসিকতা।

যে কোনো স্বাভাবিক শিশু একটি সম্পূর্ণ সত্তা হিসেবে এসেছে। আপনি কেবল শিশুটিকে তার পূর্ণ সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে পোষণ করতে পারেন। তাদের আপনি অন্য কিছু বানিয়ে ফেলতে পারেন না। যদি আপনার কাছে নারকেলগাছ একটি আদর্শ গাছ হয় এবং আপনার বাগানে একটি আমগাছ অঙ্কুরিত হয়, আপনি কী করবেন? যেহেতু এটা নারকেলগাছের মতো দেখাচ্ছে না, আপনি সব শাখাই ছেঁটে ফেলবেন, কেবল একটি রেখে?

সেটা একটা অতি নিকৃষ্ট আমগাছ হবে। আপনি শুধু এইটুকু করতে পারেন—শিশুটিকে তার সম্পূর্ণ বুদ্ধিমত্তা, শারীরিক বিকাশ ও মানসিক সমৃদ্ধির জন্য সাহায্য করুন। তখনই সেটা করতে পারবেন, যখন আপনি শিশুটিকে কেবলই লালনপালন করবেন, অনর্থক ঘাঁটাঘাঁটি বা তছনছ করবেন না।

সুতরাং একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে আপনার শিশুর জন্য। সন্তানেরা আপনার মাধ্যমে এসেছে, তারা আপনার থেকে আসেনি। কখনো এটা ভাববেন না যে, ওরা আপনার। এটা একটা সৌভাগ্য যে, ওরা আপনার মাধ্যমে জীবন গড়ছে। আপনার কাজ হলো কেবল একটা স্নেহময় ও সহায়ক পরিবেশ প্রদান করা। আপনার চিন্তাধারা, আবেগ, আপনার দর্শন, ধর্ম-বিশ্বাস আরও কিছু ফালতু ব্যাপার শিশুটির ওপর চাপিয়ে দেবেন না। তার যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তা রয়েছে নিজের পথ খুঁজে নেয়ার জন্য। আপনি যদি তার বুদ্ধিমত্তার পূর্ণ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেন, সে তার মতো করে সবকিছু ঠিক সামলে নেবে।

‘সবকিছু কি ঠিকঠাক হবে? শিশুটি কি ঠিক পথে যাবে?’ ঠিক পথে যাবে, কি ভুল পথে যাবে—সেটা আসল কথা নয়। ভুল পথে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যখন কোনো বাচ্চা নিজের বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে বড়ো হয়, যদি একটা ভুল করে, সেটা শুধরে নেয়ার বুদ্ধি তার তৈরি। যতক্ষণ তারা নিজেদের সমৃদ্ধির জন্য কাজ করছে এবং তাদের নিজেদের জীবনের বিরুদ্ধে কোনো ভুল কাজ করছে না, আপনি অপেক্ষা করুন। যতক্ষণ না বাচ্চাটি একুশ বছরের হচ্ছে, আপনি মনে করুন আপনি ততদিন গর্ভবতী রয়েছেন। শুধু অপেক্ষা করুন। যখন বাচ্চাটি পেটে ছিল, আপনি তো কেবল অপেক্ষাই করেছেন, তাই না? কেবল নিজেকে পুষ্টি দিয়েছিলেন আর অপেক্ষা করেছিলেন। ঠিক সেই রকম—উপযুক্ত পরিবেশ দিন আর অপেক্ষা করুন।

সৌজন্যে : ঈশা ফাউন্ডেশন

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003709077835083