শিশুদের স্কুলের সময়সূচিও বদলানো দরকার - Dainikshiksha

শিশুদের স্কুলের সময়সূচিও বদলানো দরকার

লায়ন মো. শামীম সিকদার |

শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তিনি কোমলমতি শিশুদের পরীক্ষাভীতি থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এখন থেকে শিশুরা তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শিখবে খেলতে খেলতে, হাসি-আনন্দে আর নিজের মতো করে। তাদের দিতে হবে না পরীক্ষা।

এই তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুলে উপস্থিতি, স্কুল থেকে দেয়া ডায়েরির রিপোর্টই মূল্যায়নের ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে। পরীক্ষার চাপ যেন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বাধা হতে না পারে, সে জন্যই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

প্রাথমিক স্তরের সব বিদ্যালয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার জন্য এক ধরনের মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। এসব পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার জন্য শিশুদের মায়েরা অবতীর্ণ হয় পরীক্ষা যুদ্ধে। সব অভিভাবকই চান তার সন্তান প্রথম হোক। এজন্য শিক্ষার্থীর ওপর দেয়া হয় লেখাপড়ার প্রচণ্ড চাপ।

পড়ালেখা ছাড়া আর কোনো কাজ শিশুদের যেন থাকতে নেই। খেলাধুলা করার সময়টাও তারা অপচয় মনে করে। শিশুদের তৈরি করা হয় যন্ত্রমানবে। তাদের সবকিছুই চলে মা-বাবার নির্দেশ মতো। এসব শিশু নিজের মতো করে কিছু করতে পারে না।

অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের ফলে শিশুরা এই ভীতিকর অবস্থা থেকে মুক্তি পাবে। প্রাক-প্রাথমিকের মেয়াদ এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করারও চিন্তাভাবনা চলছে। কিন্ডার গার্টেনের দৌরাত্ম্য কমিয়ে চার বছরের বেশি বয়সী শিশুকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়মুখী করতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

শিশুর ওপর থেকে পরীক্ষার চাপ কমাতে সিঙ্গাপুর-ফিনল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বের আদলে শিক্ষাব্যবস্থা সাজানোর নির্দেশ দেয়ায় দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের অতিরিক্ত চাপ কমে যাবে। ফলে তারা আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়া শিখতে পারবে।

প্রাথমিক শিক্ষার আরেকটি বিষয়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। তা হল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া ৪টা। এত লম্বা সময় শিশুদের বিদ্যালয়ে থাকার মতো শক্তি থাকে না। একজন শিশু শিক্ষার্থীকে সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে বিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দিতে হয়। তার মানে তাকে সকালের খাবার আরও আগে খেতে হয়। এরপর বিদ্যালয়ে এসে একটানা সাড়ে তিন ঘণ্টা ক্লাস করার পর দুপুর সোয়া ১টার সময় মাত্র ৩০ মিনিটের বিরতি দেয়া হয়।

এ সময়ের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে বাড়ি গিয়ে খাবার খেয়ে ফিরে আসাটা দুরূহ। ধরে নিলাম বাড়ি গিয়ে খেয়ে আসা সম্ভব; কিন্তু দুপুর ১টার মধ্যে গ্রামের ক’জন মা পারেন রান্নার কাজ শেষ করতে? অধিকাংশই পারেন না। শিশুদের সঙ্গে কথা বলে এসবের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষা বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা বিদ্যালয়ে দুপুরের টিফিন নিয়ে আসার জন্য বলেন। গ্রামাঞ্চলের শিশুদের ক’জন মা পারেন সকালের সাংসারিক কাজকর্ম শেষ করে সন্তানের জন্য টিফিন তৈরি করে দিতে?

আবার দেয়ার মতো সময় থাকলেও কতজন অভিভাবকের সামর্থ্য আছে টিফিনের জন্য বাড়তি খরচ করার? তার মানে দুপুরে না খেয়ে বা সামান্য কিছু খেয়ে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত শিশুদের ক্লাসে থাকতে হয়।

এ অবস্থায় বিকালের ক্লাসগুলো থেকে পড়া আয়ত্ত করার মতো শক্তি তাদের থাকে না। আমি দেখেছি বিকালে যখন বিদ্যালয় ছুটি হয় তখন তারা ক্লান্তভাবে স্কুল থেকে বের হয়। শহরের বিদ্যালয়গুলোতে এর কিছুটা ব্যতিক্রম থাকতে পারে। তবে গ্রামেই বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেশি। তাই শিশুশিক্ষাকে আরও কার্যকর করার জন্য তাদের বিদ্যালয়ে অবস্থানের সময় কমালে শিশুরা পড়ালেখার প্রতি আরও আগ্রহী হবে।

সূত্র: যুগান্তর

শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0063040256500244