শিশুরা মাটির শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা জানালো - দৈনিকশিক্ষা

শিশুরা মাটির শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা জানালো

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

ইট, মাটি আর পরিত্যক্ত টাইলস দিয়ে এক সপ্তাহ ধরে নিজেরাই পরিশ্রম করে গড়ে তুলেছে শহীদ মিনার। নির্মাতাদের কেউ শিশুশ্রমিক, কেউবা শিক্ষার্থী। একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে নিজেদের বানানো সেই শহীদ মিনারেই ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে কোমলমতি এ শিশুরা। মহল্লার মধ্যে স্থাপিত পুরাতন ভূমি অফিসের সামনে দীর্ঘদিন আগের নির্মাণ করা শহীদ মিনারটি ভেঙে গেছে কয়েক বছর আগে। আর কোনও শহীদ মিনার না থাকায় নিজেরাই বানিয়ে নিয়েছে স্মৃতির মিনার।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে খঞ্জনপুর বাজারে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, মহল্লার কোমলমতি শিশুরা তাদের তৈরি করা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। তিন খণ্ডের শহীদ মিনারটি তৈরি করা হয়েছে ইটের ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে। লোহার রডের মতো মাঝখানে বাঁশের কঞ্চি দেওয়া হয়েছে।

মাটির তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে শিশুরা। ছবি সংগৃহীত

দূর থেকে দেখলে যা জানালার মতো লাগছে। স্থানীয় মসজিদের পরিত্যক্ত টাইলস বসানো হয়েছে এর মেঝেতে। দেখে বিশ্বাস করার উপায় নেই ছোটদের হাতে তৈরি এটি। কুড়িয়ে আনা নানা সাইজ ও রঙের টাইলস বসিয়ে সমান করা হয়েছে মেঝে। মাটির তৈরি হলেও শহীদ মিনারে লেগে আছে ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার ছোঁয়া।

ফুল দিতে জড়ো হওয়া শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সাত দিন ধরে এ শহীদ মিনার নির্মাণ করেছে পাড়ার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থী নিরব, তৃতীয় শ্রেণির রিফাত ও হিয়া, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিবা ও হৃদয় এবং শিশুশ্রমিক আপন ও আকাশ।

স্থানীয় খঞ্জনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিরব জানায়, তাদের মহল্লার ভূমি অফিসের শহীদ মিনারটি কয়েক বছর থেকে ভেঙে পড়ে আছে। এটি কেউ আর মেরামত করেনি। শহীদ দিবসে সবাই শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়। নিজেদেরটা ভাঙা থাকায় শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতির মিনার বানিয়েছে তারা।

নিরব বলে, গত সাত দিন পরিশ্রম করে ইট, মাটি ও টাইলস এবং সামান্য সিমেন্ট কিনে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করেছি। এতে আমাদের খরচ হয়েছে তিনশ’ টাকা। যা আমরা সবাই মিলে দিয়েছি।

ডিজাইন কে করেছে জিজ্ঞেস করলে শিশুশ্রমিক আকাশ বলে, মহল্লার ভাঙা শহীদ মিনার দেখে আমরা এটি নির্মাণ করেছি। সংসারে অভাবের কারণে আমি স্কুলে যেতে পারিনি। আমি স্থানীয় একটি গ্যারেজে মেকানিক্সের কাজ শিখছি। বন্ধুরা সবাই মিলে উদ্যোগ নেওয়ায় আমিও তাদের সহযোগিতা করেছি। সকালে এসে সবাই মিলে আমাদের নির্মাণ করা শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছি।

অপর শিক্ষার্থী রিফাত বলে, সকালে ফুল সংগ্রহ করার পর শহীদ মিনারে গিয়ে সবার সঙ্গে আমিও ফুল দিয়েছি।

স্থানীয় যুবলীগ নেতা মোসাদ্দেক বিল্লাহ ও আব্দুল মজিদ বলেন, আমাদের মহল্লায় যে শহীদ মিনার ছিল সেটি দীর্ঘদিনের হওয়ায় কয়েক বছর আগে ভেঙে গেছে। এরপর বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেছি, কিন্তু শহীদ মিনারটি নির্মাণের বিষয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।

তারা আরও বলেন, পুরাতন শহীদ মিনারের জায়গায় নতুন আরেকটি মিনার নির্মাণ করা হলে কোমলমতি শিশুদের আর এভাবে কষ্ট করে শ্রদ্ধা জানাতে হতো না। 

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033919811248779