শীতে করোনা মোকাবেলায় সরকারের রোডম্যাপ - দৈনিকশিক্ষা

শীতে করোনা মোকাবেলায় সরকারের রোডম্যাপ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশে শীতের সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বা দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে- এমন আশংকা থেকে সরকার ভাইরাসটি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার ব্যাপারে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর)  বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন কাদির কল্লোল। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, কর্মকর্তারা বলেছেন,ঠাণ্ডাজনিত ফ্লুসহ নানা রোগ এবং কোভিড-১৯ এই দুই ভাগে ভাগ করে চিকিৎসার ব্যবস্থাপনা সাজানো হয়েছে। 

প্রথমত: ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগের চিকিৎসার ঔষধ বা ভ্যাকসিনের যাতে সংকট না হয় সেজন্য সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আর কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত যেসব হাসপাতাল রোগী না থাকার কারণে অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছিল, শীতের সময় সংক্রমণ বেড়ে গেলে সেগুলোকে আবার কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ব্যবহারের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এছাড়াও মুখে মাস্ক না পরলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের কথাও বলা হয়েছে।
গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজারের নিচে। পরীক্ষার সংখ্যাও অনেক কমে গেছে।

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ মানুষের জীবন যাপন প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের মাঝেও শৈথিল্য এসেছে।

এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার শীতের সময় সংক্রমণ বাড়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন। এরপর ভাইরাসটি মোকাবেলায় শীত কালে কী করা যতে পারে তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে জোর তৎপরতা শুরু হয়।

সিনিয়র চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত সরকারের পরামর্শক কমিটি রোববার প্রকোপ বাড়ার শংকা তুলে ধরে রোডম্যাপ তৈরির পরামর্শ দেয়। এর পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি পরিকল্পনা তৈরি করে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আব্দুল মান্নান বলেছেন, শীতজনিত রোগের চিকিৎসার ঔষধ এবং ভ্যাকসিনের মজুদ ও সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

"শীতের সময় সাধারণত মানুষের যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেটা ঠাণ্ডাজনিত। যেমন নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ নানা রোগ যা শিশু এবং বয়স্কসহ সকল বয়সের মানুষের হয়ে থাকে। তার জন্য একটা প্রস্তুতির ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের সচেতন করা হয়েছে যাতে ঔষধ বিশেষ করে ভ্যাকসিনের সংকট না হয়। আমরা যেন যথাসময়ে তা মজুদ করতে পারি বা আনতে পারি এবং হাসপাতালে সরবরাহ করতে পারি। আমরা সাথে সাথেই কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা প্রদান করেছি।"

সচিব মো: আব্দুল মান্নান বলেছেন, "আমরাও মনে করছি, বাংলাদেশে সেকেণ্ড ওয়েভ বা যে নামই বলেন না কেন, সেটা আসতে পারে। এর চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি যে শীত আসলে এর প্রকোপটা একটু বেড়ে যেতে পারে।"
মি: মান্নান জানিয়েছেন, ঠাণ্ডাজনিত রোগের বাইরে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার ব্যবস্থাপনাও কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

তিনি বলেছেন,"রোগী না থাকায় আমরা যেসব হাসপাতাল নন-কোভিডের চিকিৎসার জন্য ছেড়ে দিয়েছিলাম, সেগুলোতে বিকল্প ব্যবস্থা করে রেখেছি। খুব বেশি যদি সংক্রমণ দেখা দেয়,তাহলে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় আবার ঐ হাসপাতালগুলোকে ব্যবহারের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।"
"এটা গেলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা। আর ডাক্তারদেরও একইভাবে একই অনুপাতে আমরা প্রস্তুত রেখেছি। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমেও কিন্তু মানুষ বেশি চিকিৎসা নিচ্ছে। এর জন্যও পর্যাপ্ত ঔষধ যাতে সর্বত্র পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাও কিন্তু আমরা করে রেখেছি।"

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষের মাঝে এতটাই শৈথিল্য এসেছে যে এখন করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোর ব্যাপারেও তাদের আগ্রহ কমে গেছে। ফলে সংক্রমণের সঠিক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না।

অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য সব সরকারি হাসপাতালে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাসরিন সুলতানা বলেছেন, মহামারি শুরুর পর চিকিৎসার ব্যাপারে বেশি নজর দেয়া হলেও সংক্রমণ ঠেকানো বা প্রতিরোধের বিষয়ে গুরুত্ব কম ছিল। সেকারণে সংক্রমণ একেবারে কমে না গিয়ে ছয় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।তিনি মনে করেন এখন প্রতিরোধের ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত।

বলেন, "শুরুর দিকে বিভিন্ন হাসপাতালকে ডেডিকেটেড ঘোষণা করা হলো, হটলাইনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলো। কিন্তু এখন যেহেতু একটু স্বাভাবিক হয়েছে, তাই প্রতিরোধমূলক যেসব ব্যবস্থা নেয়া উচিত, যেমন নজরদারি, মানুষকে সজাগ করা- এনিয়ে সরকারের প্রচারণা কম। আবার মানুষেরও সচেতনতা কম। তারা এখন যেনো কেয়ারই করছে না।"
কর্মকর্তারা বলেছেন, মাস্ক ব্যবহার না করলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার করা হচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035269260406494