শুভ জন্মদিন মাশরাফি! - দৈনিকশিক্ষা

শুভ জন্মদিন মাশরাফি!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বদলে দেওয়ার একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। ভাগ্য বেশ কয়েকবারই তাঁকে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। রাতের পর রাত চোখের জল মুছেও নতুন উদ্যমে ছুটেছেন। নিয়তিকে হারানোর জন্য চোট নামক শব্দটির সঙ্গে লড়াই করেছেন বহুবার।

লড়াইয়ের একটা সময় তো চিকিৎসক বলেই দিয়েছিলেন হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের আর জায়গা নেই। তবুও থেমে যাননি, নিজের সঙ্গে প্রতিনিয়ত লড়াইয়ে দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে পার করেছেন ১৮টি বছর। সেই মাশরাফি দেখতে দেখতে জীবনের ৩৬টি বসন্ত পার করে ফেলেছেন। আজ ৫ অক্টোবর তাঁর ৩৭তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন মাশরাফি।

১৯৮৩ সালের এই দিনে নড়াইলের নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ে মহিষখোলা গ্রামে জন্ম মাশরাফির। মজার বিষয় হলো ২০১৪ সালে ঠিক আজকের দিনেই জন্ম নেয় তাঁর একমাত্র ছেলে সাহেল মর্তুজা। জন্মদিনে জুনিয়র মাশরাফিকেও শুভেচ্ছা।

দুরন্ত-দস্যিপনার মধ্যে অধিনায়কের শৈশব কেটেছে চিত্রা নদীর পাড়ে। যে নদী ছোট বেলা থেকে বেশ টানতো মাশরাফিকে। কিন্তু নদীর মায়াকে উপেক্ষা করে কখন যে ব্যাট-বলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন তা হয়তো জানা নেই মাশরাফির নিজেরও।

১১ বছর বয়সে ক্রিকেট গল্পের শুরু। নড়াইল ক্রিকেট ক্লাবে প্রথম পথচলা। এরপর ১৯৯১ সালে মাগুরা হয়ে বিকেএসপির ক্যাম্প। ওই বয়সে গতি ও সুইংয়ের খেল দেখিয়ে সুযোগ পেয়ে যান খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। তারপর শুরু হয় মাশরাফির ক্রিকেট গল্প।

২০০১ সালের ৮ নভেম্বর। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দেশের জার্সিতে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে অভিষেক হয় মাশরাফির। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে নিজের আগমনী বার্তা বুঝিয়ে দেন নড়াইল এক্সপ্রেস। একই মাসে লাল-সবুজের জার্সিতে পা রাখেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। সেই ম্যাচেও দারুণ বোলিংয়ে দলীয় সর্বোচ্চ উইকেট নেন। কিন্তু পরের বছরই নিয়তির কাছে থমকে যান অধিনায়ক।

গাছে থেকে পড়ে অপারেশনের জন্য চেন্নাই যেতে হয়। পরের বছর আবারও চোট। ছিঁড়ে যায় লিগামেন্ট। যার জন্য দুই দফায় ছুরি-কাঁচির নিচে যেতে হয়। এরপর ছোট-বড় মিলিয়ে মোট সাতটি অস্ত্রোপচার করতে হয় মাশরাফির হাঁটুতে।

এই সাতটি অস্ত্রোপচারের মধ্যে জীবনের অনেক সোনালী সময় হারিয়ে ফেলেছেন মাশরাফি। ইনজুরি তাঁর কাছ থেকে কেঁড়ে নিয়েছে ঘরের মাঠে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ। সৌভাগ্যবশত গত কয়েক বছর ছুরির নিচে যেতে হয়নি তাঁকে। তবে এখনো একটু পরিশ্রম করলে তাঁর হাঁটু ফুলে যায়। খেলা শেষে সিরিঞ্জ দিয়ে বিষাক্ত রস বের করতে হয়। ঘুম থেকে ওঠে সঙ্গে সঙ্গে বিছানা থেকেও উঠতে পারেন না।

তবে নিজের চোট যুদ্ধকে আড়াল করে টিভির পর্দায় দেখা যায় অদম্য এক মাশরাফিকে। অনেকটা রুপালি পর্দার সেসব চরিত্রের মতো, পর্দার বিনোদনদায়ী চেহারায় যাঁরা ঢেকে রাখেন বাস্তব জীবনের কষ্টগুলো। প্রতিপক্ষের উইকেট কিংবা দেশ জিতলে উল্লাসে মেতে ওঠেন। কিন্তু পর্দার পেছনের সংগ্রামের খবর কজনে রাখে!

ব্যথানাশক ওষুধ আর ইনজেকশনকে নিজের সঙ্গী বানিয়ে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক হয়ে উঠেছেন মাশরাফি। তাঁর ছোঁয়াতে বদলে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট। পুরো দলের প্রেরণার বাতিঘরও বলা চলে। দলের যেকোন মুহূর্তে, যেকোনো বিপর্যয়ে তাঁর প্রেরণাতেই জ্বলে উঠে টাইগার শিবির। একজন অভিভাবকের মত আগলে রেখেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে।

ভক্তরাও অধিনায়কের কাছে বোধহয় আশা করেন না যে প্রতি ম্যাচেই ৪-৫ টা উইকেট নেবেন মাশরাফি কিংবা ব্যাট হাতে হাঁকাবেন লম্বা ইনিংস। তারপরও তিনি মাঠে নামলে মাশরাফি –মাশরাফি ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো গ্যালারি। সবার আশা, মাশরাফি থাকুক, ক্রিকেটকে উজ্জীবিত করার জন্য হলেও মাশরাফি থাকুক।  

১৮ বছরের লম্বা ক্যারিয়ারে মাশরাফির অর্জনের খাতাও হালকা নয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দলকে ৮৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। যার মধ্যে ৪৭টি ম্যাচে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। হেরেছে ৩৬টি ম্যাচ। শতকরা ৫৬.৬২ ভাগ জয়, যেটা বাংলাদেশের অন্য কোনো অধিনায়কের অধীনে হয়নি।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে ২৮টি ম্যাচ খেলে ১০টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি একটি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই ম্যাচটিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও উজ্জ্বল মাশরাফি। ২১৭ ওয়ানডেতে ২৬৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনি। টি-টোয়েন্টিতে ৫৪ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৪২টি। আর টেস্টে ৩৬ ম্যাচে নিয়েছেন ৭৮টি উইকেট।

কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031981468200684