সংসদের শোক প্রস্তাবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক মিজানুর রহমানের নাম | বিবিধ নিউজ

সংসদের শোক প্রস্তাবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক মিজানুর রহমানের নাম

বাংলাদেশে সংবিধান ও আইন-আদালতের বাতিঘর সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন সাবেক একজন ডেপুটি স্পিকার, সাবেক একজন মন্ত্রী, সাবেক দুইজন প্রতিমন্ত

বাংলাদেশে সংবিধান ও আইন-আদালতের বাতিঘর সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন সাবেক একজন ডেপুটি স্পিকার, সাবেক একজন মন্ত্রী, সাবেক দুইজন প্রতিমন্ত্রী, সাবেক নয়জন সংসদ-সদস্যদের নামে শোক প্রস্তাব আনা হয়। শোক প্রস্তাবে মিজানুর রহমান খানের নামও ছিলো।   

শোক প্রস্তাব আনার পর মরহুমদের বিদেহী আত্মার মাফফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।  এর আগে স্পিকার সভাপতি মন্ডলির  মনোনয়ন দেন। এসব সভাপতি মন্ডলি স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে অধিবেশনের সভাপতিত্ব করবেন।

শোক প্রস্তাবে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন, দ্বিতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ শরীয়তপুর-২ আসনের সাবেক ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী,  দ্বিতীয়, পঞ্চম, ষষ্ট, সপ্তম ও অষ্টম সংসদের ফরিদপুর-৩ আসেনের আসনের সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ  পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম এবং দশম সংসদের পটুয়াখালী-৩ আসনের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী আ.খ.ম. জাহাঙ্গীর হোসাইন,  তৃতীয় এবং নবম সংসদের যশোর-৩ আসনের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী মোঃ খালেদুর রহমান টিটো,  প্রথম জাতীয় সংসদ তৎকালীন চট্টগ্রাম-১৫ আসনের শাহ-ই-জাহান চৌধুরী,  সপ্তম জাতীয় সংসদ কক্সবাজার-৪ আসনের মোহাম্মদ আলী,  সপ্তম ও অষ্টম সংসদ রাজশাহী-৩ আসনের মোহাম্মদ আবু হেনা, অষ্টম সংসদের নোয়াখালী-২ আসনের এম.এ. হাসেম, তৃতীয় সংসদের পটুয়াখালী-৩ আসনের অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, চতুর্থ সংসদ নরসিংদী-২ আসনের দেলোয়ার হোসেন খান, অষ্টম সংসদের মানিকগঞ্জ-২ আসনের সামসুদ্দীন আহমেদ, পঞ্চম সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন-১৬ এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ সংরক্ষিত মহিলা আসন-৯ এর নুরজাহান ইয়াসমিন, অষ্টম জাতীয় সংসদ সংরক্ষিত মহিলা আসন-৪ এর অ্যাডভোকেট খালেদা পান্নার মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয়।

স্পিকার বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে মহান জাতীয় সংসদ গভীর শোক প্রকাশ, সকল বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। উত্থাপিত শোকপ্রস্তাবগুলি ব্যতীত যদি কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নাম বাদ পড়ে থাকে, তবে তার বা তাদের নাম ও সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত সংসদ সচিবালয়ে পৌঁছে দিলে তা পরবর্তীতে শোকপ্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিবেচনা করা হবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। মিজানুর রহমান খান মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠীর নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন মিজানুর রহমান।  ১৪ বছরের কম বয়সে এসএসসি পাস করার পরই বরিশাল ও খুলনার স্থানীয় ও ঢাকার জাতীয় পত্রিকার নলছিটি প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি।  মিজানুর রহমান খান বহুবছর ধরে দেশের প্রধান দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তার আগে গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে দৈনিক সমকালের প্রতিষ্ঠাকালীন উপসম্পাদক ছিলেন। তারও আগে দৈনিক যুগান্তরের সহযোগী-সম্পাদক। তারও আগে ইংরেজি দৈনিক নিউনেশন ও দৈনিক মানবজমিনের বিশেষ প্রতিবেদক থাকার আগে ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত দৈনিক মুক্তকন্ঠের কূ্টনৈতিক প্রতিবেদক ছিলেন।

১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে নতুন প্রজন্মের নতুন ধারার পত্রিকা দৈনিক বাংলাবাজারের প্রতিষ্ঠাকালীন রিপোর্টার ও পরে একই পত্রিকার যথাক্রমে প্রধান প্রতিবেদক ও বার্তা সম্পাদক পদে ছিলেন। তারও আগে ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক খবর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। একই সময়ে তিনি সাপ্তাহিক মতামত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। ভারতের প্রভাবশালী আনন্দবাজার পত্রিকা গ্রুপের প্রবাসী আনন্দবাজার পত্রিকার ঢাকাস্থ নিয়মিত প্রদায়ক এবং লন্ডনের ইস্টার্ন আই পত্রিকার প্রদায়ক ছিলেন।