সংসার ফেলে শিক্ষিকা চলে গেলেন কাঠমিস্ত্রির হাত ধরে - দৈনিকশিক্ষা

সংসার ফেলে শিক্ষিকা চলে গেলেন কাঠমিস্ত্রির হাত ধরে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

নগরের হালিশহর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনিয়া সিকদার (ছদ্মনাম)। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা। লেখাপড়া করেছেন দুবাইয়ে। তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী মোজাম্মেল সিকদার (ছদ্মনাম) লন্ডন থেকে এমবিএ পাস করে ব্যবসা করছেন দেশে। সোনিয়া-মোজাম্মেল দম্পতির সংসারে এক সন্তান।

এই উচ্চশিক্ষিত এবং বিত্তশালী পরিবারের গৃহবধূ সোনিয়া সিকদার হঠাৎ নিরুদ্দেশ। আনুমানিক ৩০ বছর বয়সের এই স্কুলশিক্ষিকাকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। গত বছরের নভেম্বর মাসে এ ঘটনা ঘটে। স্ত্রীকে হারিয়ে গোয়েন্দা কার্যালয়ে হাজির হন স্বামী মোজাম্মেল সিকদার। এরপর শুরু হল গোয়েন্দা অভিযান।

অভিযানের শুরুতেই গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে, ওই শিক্ষিকা চট্টগ্রামে নেই। প্রযুক্তিগত তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দারা আরও বুঝতে পারেন, শিক্ষিকা সোনিয়া চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সময়ই তাঁর ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন।

প্রযুক্তির সহায়তায় সোনিয়ার অবস্থান সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিত হওয়ার পর গোয়েন্দা দল যশোর যাত্রা করে। সেখানে পৌঁছে একটি আবাসিক হোটেল থেকে ওই শিক্ষিকাকে উদ্ধার করতে সমর্থ হন গোয়েন্দারা।

চট্টগ্রাম ছেড়ে যশোর কেন?-এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যশোরের যুবক কাঠমিস্ত্রি তারিকুল ইসলামের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এই ফেসবুক তারিকুলের ডাকে তিনি সাড়া দিয়েছেন। চলে গেছেন যশোর। তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা জানার চেষ্টা করেন গোয়েন্দারা। পরে জানতে পারেন, ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা সোনিয়া মার্জিত ও ভদ্র পরিবারের নারী। আর তিনি পড়েছেন একজন কাঠমিস্ত্রির খপ্পরে! তারিকুল প্রায়ই নানা অজুহাতে সোনিয়ার কাছ থেকে টাকা চাইতেন, আর সোনিয়া টাকা পাঠাতেন। একপর্যায়ে নিজেই চলে যান বখাটে তারিকুলের কাছে। অবশ্য, তারিকুলই যশোর যাওয়ার জন্য সোনিয়ার টিকিটের ব্যবস্থা করেছেন। সেই টাকা সোনিয়া আগেই তারিকুলের কাছে পাঠিয়েছিলেন।

যশোর নিয়ে যাওয়ার পর তারিকুল ইসলাম একটি আবাসিক হোটেলে রাখেন সোনিয়াকে। আর পরিকল্পনা করছিলেন ভারতে পাচার করে দেওয়ার। কিন্তু গোয়েন্দারা এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে সোনিয়াকে উদ্ধার করায় তাঁকে আর পাচার করা যায়নি। তবে ঘটনায় জড়িত তারিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় গোয়েন্দারা। ওই ঘটনায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় তারিকুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, ‘স্কুল শিক্ষিকার বয়স ছিল প্রায় ৩০ বছর। তিনি ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করেন ১৮ বছরের এক কাঠমিস্ত্রির সঙ্গে। যশোর পৌঁছার পর যখন ওই যুবকের সঙ্গে দেখা হয়, তখনই তিনি বুঝতে পারেন তিনি ফাঁদে পা দিয়েছেন। যে তরুণকে তিনি ফেসবুকে দেখেছিলেন, সেই যুবক আর সামনে দেখা যুবকের অনেক তফাৎ। অর্থাৎ, ওই যুবক ছদ্মপরিচয়ে শিক্ষিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করেছিল।’ তিনি জানান, ওই শিক্ষিকাকে উদ্ধার করতে আর কিছুটা বিলম্ব হলে ভারতে পাচার করে দেওয়া হতো। সব আয়োজনই শেষ হয়েছিল। পাচারের আগেই তিনি ভাগ্যক্রমে উদ্ধার হন।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব করতেও সঠিক বিচার বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। সুযোগ সন্ধানীরা ভার্চুয়াল বন্ধু হয়ে স্বার্থ হাসিল করতে পারে। এতে বাস্তব জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাই সবারই আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।’

তাঁর মতে, যদি সোনিয়া পাচার হয়ে যেতেন, তাহলে তাঁকে উদ্ধার করা কঠিন হত। এতে সন্তান মা হারাত, স্বামী হারাতেন স্ত্রী।

স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035319328308105