সত্যিকার ছাত্ররাজনীতির চর্চা হোক - দৈনিকশিক্ষা

সত্যিকার ছাত্ররাজনীতির চর্চা হোক

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আমাদের দেশে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলছে তা আসলে ছাত্ররাজনীতি নয়। এটা যে কী রাজনীতি এবং এর সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের কতজন সত্যিকার ছাত্ররাজনীতি করে বলে এই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত সেটাই এখন খুঁজে দেখার পালা। আবরার ফাহাদের মৃত্যু আমাদের সেই উপলক্ষ্যই এনে দিল।

আমাদের এ কথা বলতে কষ্ট লাগছে। কষ্ট লাগছে এই কারণে যে, যখন আবরারের পরিবার কাঁদছে তখন আমাদের করার তেমন কিছুই নেই। যদিও ছাত্ররা প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিল। এটাই সবচেয়ে বড়ো আশার কথা। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

ছাত্ররা যেটুকু প্রতিবাদ করেছে সেটুকুতেই অনেক হয়েছে। ছাত্রদের সামনে আরো অনেক কাজ। মাত্র একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থাত্ আবরারের বুয়েটে (তথাকথিত ছাত্ররাজনীতিসহ সব ধরনের) রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে এভাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই তেমনটি করার প্রয়োজন হতে পারে বলে আমার মনে হয় না। পরিষ্কার ভাষায় বললে, যেখানেই সত্যিকার ছাত্ররাজনীতির দেখা নেই সেখানেই তা নিষিদ্ধ করতে হবে।

আর এসবই ছাত্রদের করতে হবে ঠাণ্ডা মাথায়। আমি বার বার সত্যিকার ছাত্ররাজনীতির কথা বলছি। আমার আজকের এই লেখার পাঠক যদি একজন ছাত্রও হয়ে থাকেন তাহলে তার কাছে আমার জিজ্ঞাসা, সত্যিকার ছাত্ররাজনীতি কী আপনি কি তা অনুধাবন করতে পারছেন? বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ঘটনা আপনার প্রেরণায় কাজ করে? যে আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকাই ছিল মুখ্য। তখনকার সেই ছাত্ররাজনীতি আর আজ যে রাজনীতিকে ছাত্ররাজনীতি বলা হয় সেটাকে কোনোভাবেই এক করে দেখার উপায় নেই।

কেননা টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি এ কাজগুলো কখনোই ছাত্র রাজনীতি হতে পারে না। কিন্তু এখনকার ছাত্ররাজনীতি মানেই এই। সত্যি কথা বলতে কি, এখনকার ছাত্ররাজনীতিকরা ছাত্ররাজনীতি করবেন কি তারা তো ঘুমিয়েই কূল পান না! ছাত্ররাজনীতির সংজ্ঞাটাই যেন পালটে দিতে চেয়েছে বর্তমানের ছাত্র নামধারী নেতারা।

চারপাশে ছাত্রদের কত সমস্যা। প্রতিবছর এইচএসসির পর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে শিক্ষার্থীরা কত কষ্ট করে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে দৌঁড়ে বেড়ায়। শিক্ষার্থীদের এই কষ্ট নিয়ে আমাদের শ্রদ্ধেয় একজন শিক্ষক লিখতে লিখতে কলমের নিব ভোঁতা করে ফেলছেন। তবুও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এটা নিয়ে কি বর্তমান ছাত্ররাজনীতিকরা কথা বলতে পারেন না? আওয়াজ তুলতে পারেন না?

এই যে ছাত্ররা ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি তুলল সেটা কি সত্যি সত্যি ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি, না অপরাজনীতি বন্ধের দাবি? আবরার ফাহাদ যে রাজনীতির শিকার হয়েছেন, তা হলো অপরাজনীতি। আর ঠিক এই জায়গাতেই আমার আরো একটি প্রশ্ন, তাহলে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে না অপরাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে? আমার এত প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? আমি জানি না আমার এ কথাগুলো পাঠকের কেমন লাগছে। কিন্তু বাস্তবিক কথা হলো, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার বিষয় নয়।

ছাত্ররা যুগে যুগেই তারা তাদের কষ্টের কথাগুলো একটা প্ল্যাটফর্মে এসে বলেছে। নিজেদের কষ্ট বলার পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতেও চোখ-কান খোলা রেখেছে ছাত্ররা। আর ছাত্রদের কথা বলার এই প্ল্যাটফর্মটিই হলো ছাত্ররাজনীতি। এখন সেই ছাত্ররাই ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি তুলল। এটা কি তাহলে ছাত্রদের ভুল? আমি এটা ভুল বলতে চাই না।

আমি বলতে চাই, নাম সর্বস্ব ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ছাত্ররা নিজেরা নিজেদের কথা বলবে সুস্থ ধারায়। আর তখনই হবে সত্যিকার ছাত্ররাজনীতির চর্চা। এ আমার স্বপ্ন নয়। এ আমার বিশ্বাস।

 লেখক : আলিম-উর-রহিমশিক্ষার্থী, আইন বিভাগ,গণবিশ্ববিদ্যালয়. সাভার, ঢাকা

শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038089752197266