সব কার্টুন শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়ক নয় - দৈনিকশিক্ষা

সব কার্টুন শিশুদের মানসিক বিকাশে সহায়ক নয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ছোটো বাচ্চাদের বিনোদনের অন্যতম উপাদান হলো কার্টুন। কার্টুন এমন একটি মাধ্যম যার মধ্য দিয়ে একটি শিশু নিজেকে কল্পনা করতে ভালোবাসে। তবে প্রত্যেক বাবা-মার উচিত তাদের সন্তান কী ধরনের কার্টুন দেখছে, তার ওপর নজর রাখা। একটি কার্টুন ছোটো বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। বাচ্চারা কল্পনাপ্রবণ। তারা কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে চেষ্টা করে। কিন্তু শিশুদের কার্টুন দেখার ক্ষেত্রে যথেষ্ট জটিল কিছু বিষয় পরোক্ষভাবে ঢুকে যায় সে বিষয়ে কেউ খেয়াল রাখেন না। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, সব কার্টুন এক নয়, তবে কিছুসংখ্যক কার্টুনের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। নিচে কিছু বিষয়ের মাধ্যমে সেটি তুলে ধরার চেষ্টা করছি: ১. এক রাজার সাত স্ত্রী কিংবা একের অধিক স্ত্রী। স্বভাবতই রূপকথার গল্পে এ বিষয়টি অহরহ দেখা যায়। আমরাও আমাদের ছোটোবেলা পার করেছি এ ধরনের কার্টুন দেখে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এ বিষয়টি একটি শিশুর মনে পরোক্ষভাবে ঢুকিয়ে দিচ্ছে যে, একজন ব্যক্তির একাধিক স্ত্রী থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়! শুধু রূপকথা কেন, এটা ঠিক যে রাজা-বাদশা কিংবা নবাবদের আমলেও একের অধিক স্ত্রী থাকা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। কিন্তু বর্তমান যুগে সেটি বিরল। যেহেতু কার্টুন বাচ্চাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় মাধ্যম সুতরাং এ বিষয়টি কার্টুনে না থাকাই ভালো। ২. কার্টুনের রাজকুমারী বা মূল নায়িকা অনেক ফর্সা আর আকর্ষণীয় দেহগঠনের অধিকারী হয়ে থাকে। আর খলনায়ক, খলনায়িকা, রাক্ষসী, দৈত্যরা হয়ে থাকে কালো রঙের এবং বিশাল আকৃতির। এছাড়া দৈবশক্তিতে পুকুরে ডুবে কালো মেয়ে দুধে-আলতা রং পেয়ে যাচ্ছে আর পাপকাজ করে পুকুরে ডুবে কালো রং ধারণ করছে। একটি বাচ্চা যার গায়ের রং শ্যামবর্ণের সেই বাচ্চার মনে একটু হলেও ঢুকে যায় সে কালো এবং কালো মানেই অসুন্দর। এর মাধ্যমে সে নিজেকে অভিশপ্ত মনে করতে থাকে। পাশ্চাত্যের অনেক বিখ্যাত ঔপন্যাসিকের লেখা কার্টুনগুলো বাংলায় ডাবিং করে শিশুদের দেখানো হয়। যেরকম একটি ডায়লগ, ‘বলো তো আয়না আমার চেয়ে বেশি ফর্সা এ দুনিয়ায় আর কেউ আছে কি না।’

আমি জানি না, সেই দেশে গল্পটি এরকমভাবেই রচিত কি না। কিংবা যদি রচিত হয়েও থাকে সেটা সে দেশের জন্য উপযুক্ত, আমাদের দেশের জন্য নয়। আমাদের দেশে ২০২০ সালে এসেও সৌন্দর্যের সংজ্ঞা গায়ের চামড়ার মাঝে নিহিত বলে মনে করেন তথাকথিত মানুষ। ৩. কোনো পরিশ্রম না করেই সোনা মণি-মুক্তো পাওয়া কতটা যৌক্তিক, সেটা আমার মাথায় আসে না। যদিও এটি রূপকথার গল্প কিন্তু একটি বাচ্চার মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সোনা, রুপা, টাকাই সব এবং সেই সঙ্গে তা পরিশ্রম ছাড়াই পাওয়া যায়। ৪. এছাড়া বাচ্চাদের মনে ছোটোবেলা থেকেই রূপ দেখে মোহিত হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। রাজকন্যার রূপে মোহিত হয়ে রাজকুমার পাগল হয়ে গেলেন। যেখানে গুণকে প্রাধান্যসহ, মনের সৌন্দর্যের কদর প্রকৃত অর্থে দেওয়া উচিত সেখানে প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো দেখানো হয়। যেই কার্টুন বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে, শিক্ষণীয় হবে এবং সেইসঙ্গে একটি শিশুর জীবনবোধকে জাগ্রত করবে, সেই কার্টুনই বাচ্চাদের দেখানো উচিত বলে আমি মনে করি।

মাইশা শওকত : সংগীত বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036280155181885