সরকারি প্রাথমিকে নার্সারির আদলে দুটি শ্রেণি হচ্ছে - দৈনিকশিক্ষা

সরকারি প্রাথমিকে নার্সারির আদলে দুটি শ্রেণি হচ্ছে

নিজামুল হক |

দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘নার্সারি’ শ্রেণি চালুর পরিকল্পনা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিশুদের কিন্ডার গার্টেন বিমুখ করা ও ৪ বছর বয়সী সব শিশুকে সরকারি প্রাথমিকে ভর্তির জন্যই এ ধরনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে এ ধরনের কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, প্রথম শ্রেণির আগে আরো দুটি শ্রেণি চালু করা হবে। এর নাম কী হবে এবং এর কারিকুলাম তৈরির জন্য প্রাথমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি শিশু চার বছর বয়সে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হবে। নার্সারির আদলে একটি শ্রেণিতে সে পড়বে। এরপর পাঁচ বছরে ‘শিশু শ্রেণি’ বর্তমানে যা প্রাক-প্রাথমিক হিসেবে চালু আছে সেখানে পড়বে। শিশু শ্রেণির নামও পরিবর্তন হতে পারে। এরপর ছয় বছরে প্রথম শ্রেণিতে পড়বে।

শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩৪ হাজার প্রতিষ্ঠানে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি চালু রয়েছে। প্রাক প্রাথমিকের জন্য রয়েছে পৃথক শিক্ষক। প্রথম শ্রেণির নিচে আরো দুটি শ্রেণি চালুর জন্য প্রতিটি স্কুলে আরো একজন করে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। বর্তমানে প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রীর জন্য বছরে ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই অর্থ দ্বিগুণ করা হবে।

বর্তমানে অভিভাবকরা তার সন্তানকে চার বছর বয়সে স্কুলে পাঠাতে চাইছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলে এ ব্যবস্থা না থাকায় অভিভাবকরা তার সন্তানকে কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করেন। প্রাথমিক স্কুলে চার বছর বয়সে ভর্তি করা গেলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের আর কিন্ডার গার্টেনে পাঠাবেন না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও ভালোভাবে চলবে এমন ধারণা মন্ত্রণালয়ের। দেশজুড়েই কিন্ডার গার্টেনের রমরমা ব্যবসার কারণে অনেক ক্ষেত্রে ঝিমিয়ে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

বাংলাদেশে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৬০১টি। সরকারি তালিকা অনুযায়ী কিন্ডার গার্টেন রয়েছে ২২ হাজারের বেশি। এসব কিন্ডার গার্টেন থেকে ৩ লাখ ৮৩ হাজার পরীক্ষার্থী এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর বাইরে কয়েক হাজার কিন্ডার গার্টেন রয়েছে যার কোনো অনুমোদন নেই। ইচ্ছেমত পাঠ্যক্রম পরিচালনা করে। শিক্ষার নামে বাণিজ্য করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিন্ডার গার্টেনের কর্মকাণ্ড পুরোটাই নিয়ন্ত্রণহীন।

দেশের কিন্ডার গার্টেনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে নীতিমালা প্রণয়ন করে। এসব কিন্ডার গার্টেনকে নিবন্ধন নিতে বলা হয়। নীতিমালায় কিন্ডার গার্টেনগুলোকে ক্যাম্পাসে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, টয়লেট ব্যবস্থা, স্থায়ী অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ, জাতীয় দিবস পালনসহ বিভিন্ন নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যাপারে দেওয়া হয়েছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। কোথাও একটি ফ্লোর, আবার কোথাও দুই থেকে তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চলছে। এদের বেশিরভাগেরই নেই অভিজ্ঞ কোনো শিক্ষক। দেশি নামহীন বই পড়ানো হয় এসব স্কুলে।

মাত্র এক হাজার ৫শ’ থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের শিক্ষক হিসেবে নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে এসব কিন্ডার গার্টেন। আবার এসব কিন্ডার গার্টেনের বেশিরভাগই বিকেলে কোচিং সেন্টারে রূপ নেয়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেছেন, কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষা মানহীন। কঠোরভাবে এ শিক্ষা নিয়ন্ত্রণ করা না হলে ভবিষ্যত্ শিশু শিক্ষায় বিরূপ প্রভাব পড়বে।

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক

শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.006601095199585