সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : উপাচার্য - দৈনিকশিক্ষা

সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : উপাচার্য

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত সমাজের সর্বক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে এবং দক্ষ ও প্রকৃত মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ গড়তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে উপাচার্য এ কথা বলেন।

ছবি : ঢাবি প্রতিনিধি 

আলোচনা সভায় মূল বক্তা হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, কলামিস্ট ও বুদ্ধিজীবী সর্বজনশ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতিসহ বিভিন্ন সমিতির নেতারা বক্তব্য রাখেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তথ্য-উপাত্ত ও স্মৃতিচারণমূলক সারগর্ভ বক্তব্য প্রদানের জন্য বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, কলামিস্ট ও বুদ্ধিজীবী আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিদগ্ধজন সম্পর্কে এবং এর গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে সর্বজনশ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী যে অসাধারণ বক্তব্য রেখেছেন, তা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে।

মূল প্রবন্ধে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, আজ পুরো ১০০ বছর পূর্ণ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গর্বিত ছাত্র। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পালনের আয়োজনে যোগ দিতে পারায় আনন্দিত। শতবর্ষ পালনের ইতিহাস অত্যন্ত ঐতিহ্যপূর্ণ। আমার বিস্ময় শতবর্ষ ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয় তার গৌরবময় ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বছর বছর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন মেধা ,নতুন প্রতিভা যুক্ত হয়েছে। রমেশ চন্দ্র মজুমদার, স্যার এ এফ রহমান,  সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মাহমুদ হাসান, অধ্যাপক মাহমুদ হুসেইন, বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীসহ আরও অনেক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ছিলেন। বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নিজে যেমন একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার মান বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।”

তিনি বলেন, ‘গত শতকের পঞ্চাশের দশক ছিল বাংলাদেশের বাঙালির রেনেসাঁর কাল । শিল্পে ও সাহিত্যে, বিজ্ঞান  চর্চায় পূর্ববাংলার বাঙালির নব উন্মেষের কাল। এই রেনেসাঁয় নেতৃত্ব  দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ওই দশকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েছেন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরবর্তী দশকগুলোতেও অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার অনন্য নেতৃত্বে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতির কথা আজ বিশ্বময় নন্দিত।’

তিনি আরও বলেন, প্রায় সাত দশক ধরে একুশের প্রভাত ফেরীতে যে গানটি গাওয়া হয় সেটি কবিতা হিসাবে লিখেছিলাম ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মুক্তিযুদ্ধেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অবিস্মরণীয়। পাকিস্তানি হানাদারেরা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ মাসে এবং ডিসেম্বর মাসে যে অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয় তারা প্রায় সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গেরিলা যুদ্ধে যোগদান করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস বিভাগের পুরানো ভবনের ছাদে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। একটি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখার উদাহরণ সম্ভবত আর কোন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। ৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে, ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’ যে আহ্বান জানিয়ে ছিলেন সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই ঢাকার রাস্তায় প্রতিরোধ ব্যারিকেড তৈরি করে।

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসন আমলে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসকেরা নানা উৎপাত সৃষ্টি করেছিলেন। ছাত্রদের বিভ্রান্ত করে তাদের মধ্য থেকে সন্ত্রাসীও সৃষ্টি করেছিলেন। হলে ছাত্র ভর্তি এবং শিক্ষক নিয়োগে আগের নিয়ম নীতি অনুসরণ করা হয়নি। ফলে শিক্ষাব্যবস্থাতেও অরাজকতা দেখা দিয়েছিল। দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ফিরে আসার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজকতা দূর করার চেষ্টা শুরু হয়। এটা আমার প্রার্থনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এককালে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ছিল। সেই নামে এবং গৌরবে সে যেন আবার উন্নীত হয়।’

সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শাহাদাৎবরণকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুবরণকারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি - dainik shiksha আপিলে যাবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিকে বৃহস্পতিবারও ছুটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের শাস্তি কোনো সমাধান নয় হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে - dainik shiksha সেশনজটের শঙ্কা বুয়েটে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড - dainik shiksha মাধ্যমিক প্রজন্মের উপার্জন কমবে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি - dainik shiksha ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নির্মিত তাঁবু গুটাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের অস্বীকৃতি শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032370090484619