সাতমাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না ঝালকাঠি জেলার ৫০জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাদেঁর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক খান হাবিবুর রহমানও রয়েছেন। পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত, বেকার এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নির্ভর এই একাত্তরের বীর সন্তানরা। করোনা পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে তাঁরা এখন চরম হতাশায় হতাশায় ভুগছেন। ভাতা বন্ধ হওয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের সাথে মিল নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমাজ সেবা কর্মকর্তার বক্তব্যে। জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ভাতা না পাওয়ার কোন কারণ জানাতে পারেননি।
ভাতা বন্ধ হওয়া মুক্তিযোদ্ধারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অনেকের জীবন জীবিকার মূল উৎস মুক্তিযোদ্ধা ভাতা। গত জানুয়ারি মাস হতে তা হঠাৎ করে বন্ধ যাওয়ায় দিকবিদিক হয়ে পরেছেন তারা। অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধারা অমানবিক জীবনযাপন করছেন গত সাত মাস ধরে। ভাতা বন্ধ থাকার কারণে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি অনেকেই। বিকল্প অর্থের জোগান না থাকায় কোরবানিতে আরও করুণ অবস্থায় পড়তে হয়েছে।
ভাতা বন্ধ হওয়ার পরে জেলা সমাজ সেবা অফিসে গেলে তারা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে যেতে বলছেন। সেখান থেকে জেলা প্রশাসকের অফিসে যেতে বলেন। সেখান থেকে আবার সমাজ সেবা অফিসে যেতে বলেন। এভাবে অফিস টু অফিস হন্য হয়ে ঘুরতে হচ্ছে বীর মুক্তিযুদ্ধোদের। কারও কাছে কোন সমাধান না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছেন তাঁরা। এদের মধ্যে অনেকে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি।
ঝালকাঠির বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক খান হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত সাত মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না। হঠাৎ করেই ভাতা বন্ধ হওয়ার পর দুইটি ঈদ চলে গেছে। ভাতা বন্ধ হওয়া অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধারাই দরিদ্র। তাদের ঘরে ঈদ পালন হয়নি। অপরদিকে করোনার কারণে ভাতা বন্ধ হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন।
ঝালকাঠি জেলা সমাজ সেবা অফিসের উপ-পরিচালক শাহপার পারভীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যার যার অ্যাকাউন্টে টাকা যায়, সমাজসেবার ভাতা বন্ধ করার কিছু নেই। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের গেজেট অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক, খ ও গ ৩টি ভাগে তালিকা হয়েছে। গ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পাবেন না। এটা সেই তালিকায় থাকে পারে। আমার কাছে কাঁঠালিয়া উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধা ফোন করে ভাতা না পাওয়ার কথা জানালে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি। নিয়মিত কোন ভাতাভোগীর ভাতা বন্ধ হলে আমরা তা জানি না।
তবে জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অনলাইন সিস্টেমের কারণে অনেকের ভাতা বন্ধ রয়েছে। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ আসার পরে বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলেছি। খুব শিগগিরই বন্ধ হওয়া ভাতা চালু হয়ে যাবে।