জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাপ্তাহিক কোর্স স্থগিত হওয়াসহ বেশকিছু সমস্যার কারণে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ নিয়মিত কোর্সের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুরুল হাসান এ তথ্য জানান।
বিভাগের এক ছাত্রনেতা জানান, সাপ্তাহিক কোর্সের ঝামেলার কথা সামনে আনলে শিক্ষকরা বেকায়দায় পড়ে যাবে। তাই তারা এটিকে আড়ালে রেখে তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যাপক ড. মনজুরুল হাসান বিভাগের নতুন সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর অন্যান্য বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিলেও সাপ্তাহিক কোর্স ‘মাস্টার্স অব সাইন্স ইন জিআইএস ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভলেপমেন্ট (এমএসজিইডি)’ প্রোগ্রামের কিছুই তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ফলে এই প্রোগ্রাম বন্ধ হওয়া সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক কোর্স পরিচালনার বিধি অনুযায়ী এই প্রোগ্রামের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতে হলে তাকে সহযোগী অধ্যাপক হতে হবে। সম্প্রতি আগের সমন্বয়কের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে একজন সহকারী অধ্যাপককে এই দায়িত্ব দেয়া হয়। ফলে বিধি অনুযায়ী একজন সহকারী অধ্যাপক এখানে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। এতে সাপ্তাহিক এমএসজিইডি কোর্স স্থগিত হয়ে যায়। বিভাগের শিক্ষকেরা এই কোর্স চালু করার জন্য নতুন সভাপতিকে চাপ দিলেও কোর্সের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। আবার ঐ শিক্ষকেরা একাডেমিক মিটিংয়ের কথা বলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ঘোষণা করেছেন।
এ বিষয়ে সভাপতি অধ্যাপক মো. মনজুরুল হাসান বলেন, আমি মাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। সবকিছু বুঝে শুনে যৌক্তিক সময়ে একাডেমিক মিটিং ডাকব। তারা দাপ্তরিকভাবে এমএসজিইডি কোর্সের দায়িত্ব আমাকে বুঝিয়ে দেয়নি। ফলে ওই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। তাছাড়া আমি তাদের সবগুলো ফাইল স্বাক্ষর করেছি। শুধু একজন শিক্ষক ট্যুরে না গিয়ে বিল করেছে সেটাতে স্বাক্ষর করিনি।
এদিকে স্নাতকোত্তর শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার লিখিত অংশ শেষ হলেও ব্যবহারিক পরীক্ষা হচ্ছে না। এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, একাডেমিক মিটিং না ডাকার জন্য অধিকাংশ শিক্ষক ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছে। ব্যবহারিক পরীক্ষার আগে কিছু ল্যাব ক্লাস করতে হয়, সেগুলো না হওয়ার কারণে এর প্রভাব পড়েছে পরীক্ষার উপর। একাডেমিক মিটিং হলে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষকদের রাজনীতি তাদের মত চলুক কিন্তু আমাদের ক্লাস পরীক্ষা চাই। তাদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের জন্য আমাদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষকরা বর্জন প্রত্যাহার করে দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা চালু করুক।
এ বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক শাহেদুর রশিদের সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার তার বিভাগে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।